বাংলাদেশি বাবার সাথে জাপান থেকে আসা দুই শিশু কন্যার জিম্মার বিষয়টি তিন মাসের মধ্যে পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এইসময়ে শিশুরা তাদের জাপানি মায়ের কাছে বাংলাদেশে থাকবেন।
দুই শিশুর জিম্মা নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করে রবিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সর্বোচ্চ আদালত এই দুই শিশুর জিম্মার নিয়ে বিরোধের বিষয়টি আগামি তিন মাসের মধ্যে ঢাকার ২য় অতিরিক্ত পারিবারিক আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এই সময় পর্যন্ত শিশুরা মায়ের কাছেই থাকবে। তবে বাবা সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের সাথে দেখা করতে পারবে। এই সময়ে শিশুদের নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।
আদালতে মায়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, আহসানুল করিম ও শিশির মনির। আর বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও অনির আর হক।
দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে ঢাকায় এসে গত বছরের ১৯ আগস্ট জাপানি মা নাকানো এরিকোর করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট কয়েক দফায় নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সর্বশেষ গত বছরের ২১ নভেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই শিশুর জিম্মা নিয়ে করা রিটটি (কন্টিনিউয়াস ম্যান্ডামাস) বিচারিক বিবেচনায় চলমান থাকবে উল্লেখ করে অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেন
হাইকোর্ট তার আদেশে বলেন, দুই মেয়ে তাদের বাবার কাছে থাকবে। মা জাপানি নাগরিক, সেখানে তার বসবাস ও কর্মস্থল সে কারণে তিনি তার সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এক্ষেত্রে বছরে তিন বার বাংলাদেশে তার যাওয়া আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশু দুটির বাবাকে বহন করত হবে। তবে এর চেয়ে অতিরিক্ত যাওয়া-আসা বা বাংলাদেশে অবস্থানের ক্ষেত্রে খরচ মা নিজে বহন করবেন। এছাড়া বাবা মাসে কমপক্ষে দুই বার শিশু সন্তানদেরকে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেবেন।
সেই আদেশে আরও বলা হয়, গত কয়েক মাস বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত বাবদ মাকে ১০ লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে দিতে শিশুদের বাবার প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে এই শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখতে এবং প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রতিবেদন দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেন। আর জাপানে থাকা আরেক মেয়েকে হাইকোর্টে হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে ইমরান শরীফের করা রিটটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
তবে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মা নাকানো এরিকো সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি আপিল বিভাগ দুই শিশুকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। তবে বাবা ইমরান শরীফকে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯ টার মধ্যে শিশুদের সাথে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জাপানি মায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম