অনলাইন ডেস্ক :
জার্মানির ইতিহাসে বহু দশক পর তিন দলের জোট সরকার গঠনের উদ্যোগ অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। শুক্রবার সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, পরিবেশবাদী সবুজ দল ও উদারপন্থী এফডিপি দলের নেতারা প্রাথমিক আলোচনা সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট গঠন সংক্রান্ত আলোচনার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। সেই ঘোযণার পর এসপিডি-র সর্বোচ্চ নেতৃত্বম-লী সর্বসম্মতিক্রমে ওই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। গত রোববার সবুজ দলের সম্মেলনেও সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। সোমবার (১৮ অক্টোবর) এফডিপি-ও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নতুন জোট সরকারের রূপরেখা স্থির করতে দ্রুত আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বড়দিনের আগেই চ্যান্সেলর হিসেবে সরকার গঠনের আশা করছেন এসপিডি নেতা ওলাফ শলৎস। সম্ভাব্য জোট সরকারের দুই শরিক- সবুজ দল ও এফডিপি আগামী সরকারের অংশ হতে কতটা বদ্ধপরিকর, নেতাদের একটি মন্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এক সপ্তাহ আগে সবুজ দলের নেতা রোব্যার্ট হাবেক বলেছিলেন, ‘ব্যর্থতা কোনও বিকল্প হতে পারে না।’ এবার এফডিপি নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারও একই মন্তব্য করেছেন। বিরোধী আসনে বসে সরকারের সমালোচনা ও অনড় আদর্শগত অবস্থান আঁকড়ে ধরে দাবির পক্ষে সোচ্চার হওয়ার তুলনায় জোট সরকারের অংশ হিসেবে যতটা সম্ভব কাজ করে দেখানোর সুযোগের সদ্ব্যাবহার করতে চাইছে এফডিপি ও সবুজ দল। সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণও তাদের লক্ষ্য। এর বিনিময়ে বেশ কিছু নীতির প্রশ্নে আপস করতেও প্রস্তুত দলগুলোর নেতারা। এসপিডি-র সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার পর যে খসড়ার ভিত্তিতে কোয়ালিশন গড়ার আলোচনায় রাজি হয়েছে এই দুই দল, তাতে অনেক দাবির উল্লেখ না থাকায় তৃণমূল স্তরে কিছুটা অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। তবে নেতৃত্বের সরাসরি বিরোধিতার কোনও লক্ষণ এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। তিন দলের নেতারা প্রাথমিক আলোচনার সময়ে যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে এসেছেন এবং গোপনীয়তা বজায় রেখেছেন, তা দলমত নির্বিশেষে জার্মানির রাজনৈতিক মহলে সম্ভ্রম আদায় করেছে। তবে মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রশ্নে এফডিপি ও সবুজ দলের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। এফডিপি অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য তাদের শীর্ষ নেতা লিন্ডনারকেই সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে তুলে ধরছে। সবুজ দল কোয়ালিশন গঠনের প্রক্রিয়ার আগেই পদ নিয়ে এমন দাবি দাওয়া সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করেছে। ভবিষ্যৎ অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়াও এই মন্ত্রণালয় কীভাবে তিন দলের সব মৌলিক নীতি কার্যকর করার অর্থের জোগান দেবে সে বিষয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রেখে এবং করের বোঝা না বাড়িয়ে কীভাবে এমন অসাধ্য সাধন করা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গত রোববার রাতে এসপিডি নেতা শলৎস এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এমন সংশয় দূর করার চেষ্টা করেছেন। তার মতে, দেশের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য অবশ্যই অর্থের প্রয়োজন হবে। তবে সেক্ষেত্রে শুধু সরকার নয়, বেসরকারি উদ্যোগেরও বড় ধরনের অংশগ্রহণ থাকবে। দুইয়ের মধ্যে সঠিক ভারসাম্যের ভিত্তিতেই এমন চ্যালেঞ্জ সামলানো সম্ভব বলে শলৎস মনে করেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু