অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার এবং নাট্য নির্মাতা সবক্ষেত্রেই সফলতার ছোঁয়া রেখেছেন তিনি। গুণী এই মানুষটি আজ পার করলেন তার জীবনের হাফসেঞ্চুরি। ১৯৭৩ সালের ২ মে রাজধানীর নাখালপাাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশেষ এই দিনে মধ্যরাতে ফারুকী তার স্ত্রী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে নিয়ে ঘরোয়াভাবে জন্মদিনের কেক কেটে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
জন্মদিনের এই স্ট্যাটাসে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘সারাজীবন আমি বয়স গুনি নাই, গুনছি ব্লেসিংস! আজকে আমার ৫০তম জন্মদিনে এসে তাই পেছন ফিরে নিজেকে একজন কৃতজ্ঞ মানুষই মনে হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ পৃথিবী নামের এই গ্রহে এক চমৎকার জার্নির জন্য আমাকে নির্বাচিত করার জন্য। ফারুকী আরও লেখেন, ‘আমার জার্নিটা অন্য আরও কোটি রকম হতে পারতো! হতে পারতাম কীর্তনখোলা নদীর পারের এক উদাসী রাখাল। কিংবা যাত্রা প্যান্ডেলের টিকিট চেকার। অথবা কোনো এক নির্জন স্কটিশ গ্রামের পাইপার। এর কোনোটাই ভালো বা খারাপ বলছি না। বলছি এই যে বাংলাদেশের একজন গল্পকথক হইছি, হয়ে আমার সময়টাকে গল্পে ধরার চেষ্টা করছি, করতে গিয়ে কত মানুষের ভালোবাসা পাইছি, কত মানুষের সাথে কত ব্রিজ তৈরি করছি, এইসবই একেকটা ব্লেসিংস।’নিজের প্রাপ্তির প্রসঙ্গে এই নির্মাতা লেখেন, ‘তিশার মতো একজন সঙ্গী পাইছি এই জার্নিতে, ইলহামের মতো একটা বেহেশতের টুকরা পাইছি। আমি তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবো?
আজকে পিছনে ফিরে ভাবি, আমি যখন ছবি বানাতে শুরু করি, তখন যেসব রাস্তায় আমি হাঁটা ধরছিলাম, আমি তো পথ হারায়ে ঝরে যেতে পারতাম আরও এক স্বপ্নবান তরুণ হিসেবে। কত ঝড় গেছিলো, ভাষার ঝড়, অভিনয়ের ঝড়, এমনকি বিষয়ের ঝড়ও। আজকের সময়ে বসে হয়তো বোঝা যাবে না একসময় ন্যাচারাল অভিনয় করাতে চাওয়াটা কত ‘আনন্যাচারাল’ ছিল, স্বাভাবিক সংলাপ লেখাটাও কত বড় অপরাধ ছিল! আজকের বাংলাদেশি ভিজুয়াল ল্যান্ডস্কেপের দিকে তাকালে সেই সব দিন অবিশ্বাস্যই মনে হয়।’ ফিফটিতে নতুন ভূমিকায়ও মেলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করে ফারুকী লেখেন, ‘হয়তো করা যেতো আরও অনেক কিছুই, আরও অনেক বেটার কিছু, কিন্তু আজকের এই দিনে এসে অপ্রাপ্তির দিকে তাকাইতে চাই না।
কারণ যখনই গুনতে বসবেন, জীবনে প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তি বেশীই হবে। গুনতে চাই তাই ব্লেসিংস! জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ পার করে দিয়েছি! ট্রেন যতদূর যাবে, চাইবো সেটা যেন মিনিংফুল জার্নি হয় আরও। নতুন নতুন গল্পে দেখতে চাইবো সময়টাকে! আর হ্যাঁ, এমনও হইতে পারে, ছবি বানানোর পাশাপাশি দেখতে পারেন নতুন কোনো ভূমিকায়ও। কারণ জীবন শুরু হতে পারে ফিফটিতেও।’ ‘সবাই ভালো থাকবেন। ভালোবাসবেন সবাইকে। গভীরে নামলে দেখবেন, মানুষে মানুষে ঘৃণার আসলে কোনো গভীর কারণই নাই। আমাদের এইসব পার্থক্য সব ওপরের, সকলই কসমেটিক’, বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন এই নির্মাতা। বেশকিছু ভিন্নধর্মী ও দর্শকপ্রিয় মেগা ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেছেন এই নির্মাতা।
এ ছাড়া ব্যাচেলর, টেলিভিশন, পিঁপড়া বিদ্যা, ডুব, মেড ইন বাংলাদেশ, ডুবোশহর, শনিবার বিকেল, নো ল্যান্ডস ম্যান ও থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি শুরুতে লেখক আনিসুল হকের সঙ্গে বেশ কয়েকটি নাটকের কাজ করেছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাটক রচনা করেছেন আনিসুল হক এবং পরিচালনা করেছেন ফারুকী। ব্যক্তিগত জীবনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিবাহিত। ২০১০ সালে জুলাই মাসে বিয়ে করেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী তিশাকে। এই দম্পতির একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। যার নাম ইলহাম নুসরাত ফারুকী।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ