April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 9th, 2022, 6:47 pm

জুড়ী-কুলাউড়ায় বন্যায় সড়কের ক্ষয়ক্ষতি ৩৯ কোটি টাকা

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী ও উপজেলায় ভয়াবহ দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ যেন এখনো পিছ ছাড়ছে না সাধারণ মানুষের। বন্যার ভোগান্তির পর এখন চলাচলের ক্ষেত্রে ভাঙা সড়কের দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার মানুষ। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। ভাঙা রাস্তায় দিন দিন বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। ভাঙা রাস্তায় যানবাহন বিকল হয়ে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি বন্যায় উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বেশ কিছু গ্রামীন সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী ছিলেন। অনেক সড়কে যাহবাহনের বদলে চলছে নৌকা। আবার কোন কোন সড়কে নৌকা ছাড়া চলাচলের কোনো সুযোগ ছিল না।

এদিকে বন্যার পানি নামার পর বেরিয়ে এসেছে সড়কের ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা। বন্যার সীমাহীন দুর্ভোগের পর এখন চলাচলের ভাঙা সড়কের দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সাম্প্রতিক বন্যার পানিতে তলিয়ে উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামীণ পর্যায়ের সড়কের প্রায় ৭৭ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে ক্ষতি ধরা হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। গত ১৭ জুন থেকে উপজেলার হাকালুকি হাওরপাড়ের সদর জায়ফরনগর, পশ্চিমজুড়ী ইউপি সহ ফুলতলা, গোয়ালবাড়ী, পূর্বজুড়ী ও সাগরনাল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার সড়ক হাঁটুপানি থেকে বুক সমান পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় অর্ধ লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। অনেক জায়গায় নৌকা ছাড়া বাইরে বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কে চলছে ছোট–বড় নৌকা‌। এতে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে হয়েছে ব্যাপক ক্ষতি। পানি নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন সড়কের ভাঙাচোরা, ক্ষতবিক্ষত চেহারা এখন ভেসে ওঠছে। অনেক জায়গায় সড়কের পাকা পিচ উঠে গিয়ে নিচের মাটি পর্যন্ত বেড়িয়ে গেছে। কোনো স্থানের পিচ, খোয়াসহ মাটি ভেসে গেছে। সড়কের অনেক জায়গায় ছোটবড় অনেক গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও রাস্তার পাশ ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

 

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে আছে পশ্চিমজুড়ী (ইউপিসি)-জুড়ী বাজার, রত্নাবাজার- জয়চন্ডী (ইউপিসি), গোয়ালবাড়ী (আরএইচডি)-ফুলতলা (জিসি), পশ্চিমজুড়ী (ইউপিসি)- সুজানগর (ইউপিসি), জুড়ী ফুলতলা (আর এন্ড এইচ) – আলীপুর সড়ক, আর এন্ড এইচ পাতিলাসাঙ্গন- বটনীঘাট, ভূয়াই- তেঘরীঘাট, ভূয়াই- বাহাদুরপুর, বাছিরপুর বাজার সড়ক, বাছিরপুর (আরএইচডি) -দাশেরবাজার (জিসি), মানিকসিংহ – রাজাপুর সড়ক। এসব সড়কের ৪৭.৫৮ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন আঞ্চলিক মহাসড়ক সহ অন্যান্য সড়ক মিলিয়ে মোট ৩০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩৪ কোটি টাকা।

সরজমিনে গিয়ে উপজেলার জুড়ী বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের চৌমুহনী থেকে জাঙ্গিরাই ব্রীজ এলাকা পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা চোখে পড়ে। এখানে সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে হাজারো মানুষ। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গর্ত সৃষ্টি হলেও সওজের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়ে নি। ফলে ভাঙা সড়কে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ।

কুলাউড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বলেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন আঞ্চলিক মহাসড়ক সহ অন্যান্য সড়ক মিলিয়ে মোট ৩০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতির বিষয় টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

জুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাশ বলেন, জুড়ীতে বন্যায় বিভিন্ন সড়কের ৪৭.৫৮ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।