অনলাইন ডেস্ক :
ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গাব্রিয়েল জেসুসের চার গোলে ওয়াটফোর্ডকে গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগে ৫-১ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে টেবিলের শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি। বড় এই জয়ে চার পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থানটা শক্তিশালী করেছে সিটিজেনরা। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এর মাধ্যমে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগে তিন কিংবা তার বেশী গোলের কৃতিত্ব অর্জন করলেন জেসুস। সেপ্টেম্বরের পর থেকে লিগে এই ফরোয়ার্ড মাত্র এক গোল করেছিলেন। কিন্তু ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে এক অপ্রতিরোধ্য জেসুসকে দেখেছে স্বাগতিক সমর্থকরা। প্রথমার্ধে তার দুই গোলে ২৩ মিনিটেই ২-০ব্যবধানে লিড পায় পেপ গার্দিওলার দল। হানাসে কামারার গোলে ওয়াটফোর্ড ২৮ মিনিটে ম্যাচে ফিরে আসে। ৩৪ মিনিটে রড্রির গোলের ব্যবধান দ্বিগুন হয়। বিরতির পর জেসুস আরো দুই গোল নিশ্চিত করলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি। ম্যাচ শেষে জেসুস বলেছেন, ‘এটা সত্যিই চমৎকার। মাঝে মাছে দুর্দান্ত খেলেও কোন গোল পাওয়া যায়না, আবার কোন সময় সবগুলো সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল পাওয়া যায়। আজ আমার দিন ছিল, আমি সত্যিই দারুন খুশী। এটা মৌসুমের সেরা সময়। এখন সবগুলো ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ, শিরোপা কাছাকাছি আমরা পৌঁছে গেছি। আমাদের জন্য এটাই ফুটবল।’ গত সপ্তাহে এফএ কাপের সেমিফাইনালে লিভারপুলের কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নেবার পর গার্দিওলা লিগ শিরোপা জয়ের জন্য যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল তারই প্রমান কাল মাঠে পাওয়া গেছে। আগের ম্যাচে তারা ব্রাইটনকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে। এই জয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিভারপুলের উপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে সিটিজেনরা। গত পাঁচ বছরে চতুর্থ ইংলিশ শিরোপা নিশ্চিতের জন্য সিটির হাতে আর মাত্র পাঁচটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের আগে ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে বড় এই জয়টা ছিল যথাযথ প্রস্তুতির লক্ষন। গার্দিওলা বলেছেন, ‘এই দলে যদি একজন খেলোয়াড় থেকে থাকে যার জীবনে সেরা কিছু পাওয়াটা প্রাপ্য তিনি হলেন জেসুস। তার জন্য পজিশন কোন বিষয় না। আমরা জানি সতীর্থদের জন্য সে কিভাবে লড়াই করে থাকে। জেসুস সত্যিই অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন লিডসের বিপক্ষে ম্যাচটাকেই আমরা ফাইনাল ধরে নিচ্ছি। মূলত শেষ পাঁচটি ম্যাচই এখন ফাইনালের মত। সবগুলোতে জিতে আমরা নিজেদের কাজটুকু সেড়ে রাখতে চাই।’ ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচের থেকে ৬টি পরিবর্তন করে কাল মূল দল সাজিয়েছিলেন গার্দিওলা। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে জন স্টোনসের স্থানে ১ মার্চের পর মূল একাদশে ফিরেছেন রুবেন দিয়াস। ২০০৬ সালে ইতিহাদে গোলশুন্য ড্র হবার পর এর আগে সাতটি সফরের প্রতিটিতেই পরাজিত হয়েছে ওয়াটফোর্ড। এই ম্যাচগুলোতে সিটির দেয়া ২৫টি গোলের বিপরীতে তারা মাত্র দুটি গোল পরিশোধ করেছে। ১৯৮৯ সালের পর তারা কখনই সিটিকে পরাজিত করতে পারেনি। কালও এই আধিপত্য বজায় রেখে ম্যাচের চার মিনিটেই এগিয়ে যায় সিটি। হুয়াও ক্যান্সেলোর ক্রস থেকে ওলেক্সান্দার জিনচেনকো অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা জেসুসের দিকে বল বাড়িয়ে দেন। পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ান জেসুস। এক গোলে পিছিয়ে থাকার পর ওয়াটফোর্ড কিছুটা আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে। এমানুয়েল ডেনিসের শট কোনরকমে ব্যর্থ করে দেয় সিটির ডিফেন্ডাররা। শেষ মুহূর্তে জিনচেনকো একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। ২৩ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার নিখুঁত ক্রস থেকে জেসুস দুর্দান্ত হেডে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। পাঁচ মিনিট পরে এক গোল পরিশোধ করে ওয়াটফোর্ড। ডেনিসের ফ্লিক থেকে লো স্ট্রাইকে সিটি গোলরক্ষক এডারসনকে পরাস্ত করেন কামারা।৩৪ মিনিটে দূর পাল্লার শটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন রড্রি। ৪৯ মিনিটে কামারান ভুলে ফস্টারের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন জেসুস। স্পট কিক থেকে ব্যবধান বাড়ানোর পাশাপাশি হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এই ব্রাজিলিয়ান। কিন্তু তারপরও থেমে থাকেননি ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। ৫৩ মিনিটে জ্যাক গ্রীলশ ও ডি ব্রুইনার যৌথ সহযোগিতায় নিজের চতুর্থ গোল পূরণ করেন জেসুস।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা