সিলেটের জৈন্তাপুরের বড় নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু, পাথর উত্তোলন বন্ধ, বোল্ট গেট দিয়ে বালু-পাথর পরিবহন বন্ধ এবং নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরকারি রয়েলটি আদায়ের দাবিতে নৌকা দিয়ে নদীপথ বন্ধ করে অবরোধ পালন করেছে বালু শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সারী নদীর ইন্দারজু এলাকায় নৌকা বন্ধন করে শ্রমিকরা নদীপথ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়৷
অবরোধ পালনকারী সারী নদী নৌকা শ্রমিকের সভাপতি আমির আলীর সহ-সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সম্প্রতি সারী নদীর তৃতীয় অংশের মামলাভুক্ত এলাকা ছাড়া বাকি দাগগুলো ইজারা দেয় সরকার। কিন্তু উল্লেখিত দাগগুলোতে বালু-পাথর না থাকায় মামলাভুক্ত দাগ থেকে অবৈধ ভাবে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ও স্থানীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহায়তায় অবৈধভাবে ড্রেজার ব্যবহার এবং বোল্ট গেট নৌকা ব্যবহার করে বালু-পাথর পরিবহন করা এবং স্থানীয় নৌকা শ্রমিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদে তারা এই অবরোধ পালন করছেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট (সোমবার) তারা বিক্ষোভ মিছিল করে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে। দ্রুত সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা স্মারকলিপি প্রদান করে।
তাদের দাবি, অবিলম্বে সারী নদী থেকে ড্রেজার অপসারণ, বোল্ট গেট নৌকায় মালামাল পরিবহন বন্ধ, সরকারি রয়েলটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে আদায় এবং সারী নদীর মধ্যে থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ।
শ্রমিকরা আরও জানান, গতকাল সোমবার বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দিয়েছি, আজ নদী পথ অবরোধ করেছি। তারপরও যদি সমাধান না আসে ৩১ আগস্ট বুধবার সকাল তেকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সারীঘাট পয়েন্টে সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।
নৌকা শ্রমিক সভাপতি আমির আলী জানান, ‘শ্রমিকদের পেটে লাথি দিয়ে ড্রেজার ব্যবহার করে এবং বোল্ট গেট ব্যবহার করে সারী নদীতে অবৈধ কার্যক্রম চলতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আমাদের শরীরের রক্ত দিয়ে হলেও বাঁধা দিয়ে দাবি আদায় করব। আপনারা আমাদের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরুন। আমরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে নয় ম্যানুয়ালভাবে কর্ম করে বেঁচে থাকতে চাই।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলার সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিকদের কর্মহীন করতে যারা অবৈধ যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করে শ্রমিকদের কর্মহীন করার পায়তারা করছে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান প্রশাসনের কাছে। অন্যথায় ঘুমন্ত ও শান্তি প্রিয় জৈন্তাপুরের শ্রমিকরা ক্ষেপে উঠলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধ করা কঠিন হয়ে উঠবে।
শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক ও যুক্তিসংগত দাবি বলে তিনি মনে করেন।
অবিলম্বে তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন,‘আমি শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে অবহিত করেছি।’
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আমার দপ্তরে এসেছিল। আমি তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আসলে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি