জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:
পলো বাওয়া উৎসব গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের একটি অপরিহার্য অংশ। আগেকার দিনে বছরে একবার উৎসবটি পালন করেন বিল পাড়ের লোকজন।
উৎসবের আগে গ্রামে গ্রামে জানিয়ে দেওয়া হয় উৎসবের তারিখ। খবর জানার পর লোকজন পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে বাজার থেকে নতুন পলো ক্রয় করে।
উৎসবের দিন সকালে নিজ নিজ পলো, হাতাজাল, উড়ালজাল ও লাঠিজাল সহ নানা ধরণের মাছ ধরার জন্য দরবস্ত ইউনিয়নের হরুজরী বিলের পাড়ে গিয়ে জমায়েত হন। ঘড়ির কাটায় নির্ধারিত সময় বেজে ওঠলেই সবাই মিলে এক সঙ্গে পলো নিয়ে পানিতে ঝাপিয়ে পড়েন হরুজুরী বিলে। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন ধরণের জাল দিয়েও মাছ শিকার করে অনেকটা আনন্দ পান।
বর্তমান যুগে কালের গর্বে সেই উৎসবটি বিলিন হতে চলেছে। নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলেরা পলো বাওয়া উৎসব কি সেটাও বুঝে না। কিন্তু সেই উৎসবটি ধরে রেখেছেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের চাল্লাইন- করগ্রামবাসী।
প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহে গ্রামের লোকজন তাদের বিলে উৎসবটি পালন করে থাকে। নির্ধারিত তারিখে উৎসবটি পালন করতে অনেক প্রবাসীরা দেশের বাড়িতে চলে আসে। এবছরও উৎসবটি উপভোগ করতে অনেক প্রবাসীরা দেশে এসেছেন।
প্রতি বছরের ন্যায় শনিবার (২৮ জানুয়ারী) সকাল ৮টায় লোকজন পলো সহ মাছ ধরার বিভিন্ন যন্ত্র নিয়ে বিলের পাড়ে সমবেত হয় দরবস্ত ইউনিয়নের করগ্রাম চাল্লাইন গ্রামের হরুজুরী বিলে। সকাল ১০টায় এক সঙ্গে গ্রামের কয়েক হাজার লোক পলো নিয়ে বিলের পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে।
হরুজুরী বিলের পাড়ে উৎসব উপভোগ করতে আসা গ্রামের আমিনুর রহমান (৭৫), মোশাহিদ আলী (৪৫), হোসেন আলী (৩৫), মোস্তফা মিয়া (৩৫) কাবির আহমদ (৪৫), জয়নাল আবেদীন (৫৫) বলেন, তাদের পূর্বপুরুষরা প্রায় দেড়শত বছর ধরে এই উৎসবটি পালন করছে। গত তিন বৎসর করোনা মহামারিতে তারা এই উৎসব পালন করেনি৷ এবৎসর পুনরায় পূর্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় উৎসব পালন করলেন ৷ গ্রামের অনেকেই রুই, রাঙ্গা কারপু, বোয়াল, শউল ও মাগুর মাছ সহ নারা রকমের মাছ ধরেছেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি