অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রশিক্ষক বৈমানিক ফারিয়া লারাকে নিয়ে ছবি ‘লারা’ প্রযোজনা করছেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ১৯৯৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর উড্ডয়নের সময় অকালে নিহত হন বৈমানিক ফারিয়া লারা। আগুন লেগে এয়ার পারাবতের বিমানটি ঢাকার পোস্তগোলায় বিধ্বস্ত হলে লারাসহ দুজন নিহত হন। ১৫ মিনিট আগে ইমার্জেন্সি কল দিয়ে কন্ট্রোলকে জানান ‘আমি আর কয়েক মিনিট বেঁচে আছি এই পৃথিবীতে’। ‘মে ডে’ কল করার পর মাত্র কয়েক মিনিটই তিনি বেঁচে ছিলেন। এই বৈমানিকের মা প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাবা মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন। মেয়েকে নিয়ে ২০০৬ সালে ‘লারা’ নামের একটি উপন্যাস লিখেছেন সেলিনা হোসেন। ছবি ‘লারা’ বানানোর জন্য এরইমধ্যে সেলিনা হোসেনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়েছেন জ্যোতিকা জ্যোতি। ছবিটি প্রযোজনার জন্য এ বছর ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছেন অভিনেত্রী। এটি পরিচালনা করবেন শেখর দাশ।
অভিনেত্রী থেকে প্রযোজক বনে যাওয়া জ্যোতি বলেন, ‘২০২০ সাল থেকেই ছবিটি নির্মাণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এতদিন একা একাই কাজ করছিলাম। এখন আমার সঙ্গে যুক্ত হলেন পরিচালক। বইটি নিয়ে অনেকেই ছবি করতে চেয়েছেন। এ জন্য আমি সেলিনা হোসেনের কাছ থেকে লিখিতভাবে অনুমতি নিয়েছি। আগামী ১০ বছর লারাকে নিয়ে কেউ ছবি নির্মাণ করতে পারবে না।’ একজন নারীর উড়ে বেড়ানোর গল্প ‘লারা’। বাঙালি নারীও যে দুঃসাহসী হতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ফারিয়া লারা। জ্যোতি জানান, ছবির চিত্রনাট্য লেখা হচ্ছে। বই থেকে ছবিটি তৈরি হলেও আরো গবেষণা করতে হবে। অনুদানের জন্য প্রাথমিক চিত্রনাট্য জমা দেওয়া হয়েছিল। চিত্রনাট্য সম্পন্ন হলে লারা চরিত্রের অভিনেত্রীর নাম ঘোষণা করব। জ্যোতি আরো বলেন, ‘ছবিতে লারার মা সেলিনা হোসেনের চরিত্রটিও গুরুত্বপূর্ণ। দুটি চরিত্রেই মানানসই অভিনেত্রী নেওয়া হবে। আমি নিজেও করতে পারি যেকোনো একটি চরিত্র। নিজের ছবি বলে নয়, ভালো চরিত্রের খোঁজে কে না থাকেন। এ বছরই শুটিং শুরু করার ইচ্ছা।’
অনুদানে ৬০ লাখ টাকা পেলেও ‘লারা’ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক তিন কোটি টাকা। জ্যোতি বলেন, ‘আমাকে আরো প্রযোজক খুঁজতে হবে। বড় আয়োজনের ছবি এটি। একজন নারী পাইলটের স্ট্রাগল। লারার মতো ডায়নামিক নারীর যে লাইফস্টাইল সেটা নিয়ে ছবি তৈরি করতে এমন বাজেটের বিকল্প নেই। বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার লক্ষ্যেই ছবিটি নির্মাণ করব।’ মাত্র ২৮ বছর পৃথিবীতে ছিলেন ফারিয়া লারা। ১০ বছর বয়সেই বিটিভির খুদে সংবাদ পাঠিকা হয়েছিলেন। হলিক্রস কলেজে পড়ার সময় ছিলেন তুখোড় এক তার্কিক। নতুন কুঁড়িতে ছবি আঁকা ও উপস্থিত বক্তৃতায় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন।
শৈশবেই দেশ-বিদেশে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। খ-কালীন সাংবাদিকতা, বিভিন্ন এনজিওর অধীনে দেশের নানা সমস্যা নিয়ে জরিপ, গবেষণাকাজেও যুক্ত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়ার সময় ফ্লাইং একাডেমি এয়ার পারাবতের অধীনে ফ্লাইং শেখা শুরু করেন তিনি। বিমানচালকের পেশা এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ, তার ওপর একটি মেয়ে যখন সে পেশায় আগ্রহী হন, তখন চারপাশ থেকে অনেক বাধা আসে। অথচ এ সবকিছুই লারাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে লারা সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রাইভেট পাইলটের লাইসেন্স অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ লারা বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স লাভ করেন। এরপরই তিনি পাইলটদের প্রশিক্ষক হওয়ার প্রশিক্ষণ নেন।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ