March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 1st, 2022, 7:47 pm

জয় পেয়ে সেরেনা বললেন ‘এটা বোনাস’

অনলাইন ডেস্ক :

প্রথম রাউন্ডের জয় যেমন-তেমন। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে তো প্রতিপক্ষ বিশ্বের দুই নম্বর তারকা আনেত কন্তাভেত! এই ম্যাচে সেরেনা উইলিয়ামসের পক্ষে বাজি ধরার লোক ছিল কমই। কিংবদন্তির সিঙ্গেলস ক্যারিয়ারের শেষ এই ম্যাচ দিয়েই কিনা, সেই আলোচনাও ছিল। কিন্তু সব আলোচনা আরও কদিনের জন্য থামিয়ে কন্তাভেতকে হারিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে পা রাখলেন সেরেনা। ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে কন্তাভেতকে ৭-৬ (৪), ২-৬, ৬-২ গেমে হারান সেরেনা। জয়ের পর উচ্ছ্বসিত এই তারকা বলেন, প্রতিটি ম্যাচকেই তিনি এখন বোনাস হিসেবে দেখছেন। নিউ ইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে রেকর্ড ২৯ হাজার ৯৫৯ দর্শকের সামনে প্রায় আড়াই ঘণ্টার উত্তেজনাপূর্ণ, রুদ্ধশ্বাস ও নাটকীয় লড়াইয়ের পর জয়ের দেখা পান সেরেনা। তার সেরা সময়ের কিছু ঝলক তিনি দেখান এ দিন। গ্যালারিতে ছিলেন গলফ কিংবদন্তি টাইগার উডস ও আলপাইন স্কি রেসার লিন্ডসি ভনের মতো তারকারাও। সেরেনার রোমাঞ্চকর টেনিস দেখে তারাও দারুণ উৎসাহ ও সমর্থন জুগিয়ে যান ম্যাচজুড়ে। এক সময়ের অবিসংবাদিত সেরা, ৩১৯ সপ্তাহ র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা সেরেনা এই টুর্নামেন্ট শুরু করেছেন অবাছাই হিসেবে। র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম ৬০০ জনের মধ্যেও তার জায়গা হয়নি। সবশেষ তিন ইভেন্টে তিনি বাদ পড়েছেন প্রথম রাউন্ডেই। বয়সও এই মাসেই পূর্ণ হবে ৪১। প্রতিপক্ষ কন্তাভেত শুধু বিশ্বের দুই নম্বর তারকাই নন, তার খেলার ধরন হার্ড কোর্টের জন্য দারুণ উপযুক্ত। এস্তোনিয়ার এই ২৬ বছর বয়সী খেলোয়াড় তার ক্যারিয়ারের ৬ শিরোপার ৫টিই জিতেছেন হার্ড কোর্টে। এই ম্যাচেও তিনি ছিলেন পরিষ্কার ফেবারিট। কিন্তু সেরেনা দেখিয়ে দিলেন, ছন্দে থাকলে তাকে এই বয়সেও দমিয়ে রাখা কঠিন। একসময় যিনি ট্রফির পর ট্রফি জিতেছেন অপ্রতিরোধ্য পথচলায়, সেই সেরেনা ২০২১ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেনের পর প্রথমবার জিতলেন টানা দুটি ম্যাচ। এবারের ইউএস ওপেনের আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এই আসর দিয়ে ইতি টানতে পারেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। তবে প্রথম রাউন্ডে দানকা কোভিনিচকে হারানোর পর তিনি রহস্য রেখে দেন অবসর নিয়ে। তার পরও খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনিশ্চয়তা প্রবল বলেই তার প্রতিটি ম্যাচকেই সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ হিসেবে দেখা হচ্ছে টেনিস আঙিনায়। তাই কৌতূহলও থাকছে প্রতিটি ম্যাচ নিয়ে। দারুণ এই জয়ে রোমাঞ্চিত সেরেনা লাজুক কণ্ঠে মজা যেমন করলেন, তেমনি বললেন চ্যালেঞ্জ জয়ের তৃপ্তির কথাও। “আমি মনে হয়, বেশ ভালোই খেলি! এটাই আমি সবচেয়ে ভালো পারি- চ্যালেঞ্জ ভালোবাসি, চ্যালেঞ্জের সময় নিজেকে মেলে ধরতে পছন্দ করি। নিউ ইয়র্কে এবার এই ম্যাচ দুটিতে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে। আমি দারুণ লড়িয়েৃ সত্যি বলতে, এটিকে ¯্রফে বোনাস হিসেবে দেখছি। আমার কিছুই প্রমাণের নেই।” বিশ্বের দুই নম্বর তারকাকে হারানোর পর এখন তার শিরোপা সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী তারকা আরেকবার চ্যাম্পিয়ন হলেই স্পর্শ করবেন মার্গারেট কোর্টের ২৪ ট্রফির রেকর্ড। ২০১৭ সালে মেয়ে অলিম্পিয়ার জন্মের পর চারটি গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠলেও শেষ সাফল্য তিনি পাননি। এবার কি তাহলে হবে? সেরেনা এখনই ওসব না ভেবে উপভোগের মন্ত্রে এগোতে চান প্রতিটি ম্যাচ ধরে। “অত দূর এখনও ভাবতে পারছি না। আমি এখানে এসেছি, মজা করছি, উপভোগ করছি। বেশ ভালো খেলছি।” “আমার এমনিতেও মনে হচ্ছিল যে অনুশীলন খুব ভালো হচ্ছে। তবে ম্যাচে সবকিছু একসঙ্গে হচ্ছিল না। এখন মনে হয় অবশেষে ঠিকঠাক হচ্ছে।” তৃতীয় রাউন্ডে সেরেনার প্রতিপক্ষ আয়লা তমইয়ানোভিচ। ২৯ বছর বয়সী এই তারকা সেরেনাকে আদর্শ মেনেই টেনিসে এসেছেন। সম্ভাব্য জয়-হার ভুলে তিনি উচ্ছ্বসিত সেরেনার সঙ্গে খেলতে পারবেন জেনেই। “ক্যারিয়ারের এই ম্যাচ আমি নিশ্চিতভাবেই কখনও ভুলব না। ফলাফল যা-ই হোক, আমার জন্য এটি হবে বিশাল এক মুহূর্ত। ছেলেবেলা থেকেই আমি সেরেনার ভক্ত। শুক্রবার রাতে যদিও আমি ¯্রফে তার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই থাকব ও জয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।” “তিনি টেনিস খেলাটাকে বদলে দিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে মেয়েদের খেলার জন্য এতকিছু করেছেন! অনেকের জন্যই তিনি পথপ্রদর্শক, আমিও তাকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছি স্বপ্নের পথে ছুটতে। এমনকি তার ক্যারিয়ার স্থায়িত্ব দেখুন, কতটা লম্বা! আমিও এখন নিজের ক্যারিয়ারের সেই পর্যায়ে এসেছি, যখন অনেকে বলে ‘বুড়ে।’ কিন্তু তিনি এই ব্যাপারটিকেই উড়িয়ে দিয়েছেন, বয়স বলে কিছু তার অভিধানে নেই। আমার মনে হয় না, তার মতো আর কেউ আছে।”