April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 29th, 2022, 6:26 pm

ঝিনাইগাতীর বিধবা মতিজান বিবির ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর

মোঃ আবু রায়হান, শেরপুর (ঝিনাইগাতী) :

শেরপুরের ঝিনাইগাতীর বিধবা মতিজান বিবির ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর। ফলে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ একটি ভাঙ্গা ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে আসছেন মতিজান বিবি। বহুবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে একটা ঘর চেয়ে আবেদন নিবেদন করলেও তিনি পেয়েছিলেন শুধুই প্রতিশ্রুতি। তাই তিনি আক্ষেপ করে বলেন মরার আগে তার ভাগ্যে জুটবেকি একটি সরকারি ঘর। মতিজান বিবি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্দিগাঁও উত্তর পাড়া গ্রামের আজিজুল হক টগরের স্ত্রী। ১৯৭১ সালে তার বিবাহ হয়। দুই ছেলে এবং দুই মেয়েসহ চার সন্তানের জননী হন মতিজান বিবি। বিবাহের পর থেকে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত তার। মতিজান বিবি আরও জানান, তার স্বামী আজিজল হক টগর চার সন্তানসহ তাদেরকে ফেলে রেখে প্রায়৩০বছর আগে আরেকটা সংসার বাঁধেন। ওই সময় সন্তানদের মুখে খাবার দিতে অনেক দুঃখ কষ্ট পোঁহাতে হয়েছে তাকে। খেয়ে না খেয়ে সারাদিন পাহাড় থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করতেন মতিজান বিবি। দিন শেষে লাকড়ি কুড়িয়ে বাড়িতে এনে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা প্রস্তুত করতেন। এরপর উক্ত কয়লা বাজারে বিক্রি করে যা অর্থ পাওয়া যেত তা দিয়ে সংসার ও ছেলে মেয়ে চাহিদা মেটাতেন। মতিজানের স্বপ্ন ছিল সন্তানেরা বড় হলে তার কষ্টের অবশান হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেল। তার কোন দায়িত্বই নেয়নি সন্তানেরা। বয়সকালে মতিজান দিন রাত পরিশ্রম করতে পারলেও এখন আর আগের মতো কাজ কর্ম করতে পারে না। বয়সের ভারে এখন চলাফেরাও করতে পারেন না তিনি। স্থানীয়রা জানান, তার স্বামীর কোন ভিটে মাটি নেই, থাকতেন অন্যের বাড়িতে। এরপর গত ৫-৬বছর আগে পার্শ্ববর্তী দরবেশ তলা নামক পাহাড়ি টিলায় বন বিভাগের জমির উপর তার জন্য একটা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। ঘরটির চার পাশে পুরনো ঢেউটিন বেড়া আর চালে রয়েছে পলিথিনের ছাউনি। বর্ষাকালে ঘরটিতে বৃষ্টির পানি পরে আর ঝড় তোফানে ঘরটি হাওয়ায় দোল খায়। তবুও ছোট্ট ঘরটিতে খেয়ে না খেয়ে, অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অসহায় হৃতদরিদ্র মতিজান।

মতিজানের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফারুক আল মাসুদ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ইতিপূর্বে “ক” এবং “খ” দুটি তালিকা করা হয়েছে। মতিজান বিবির নাম তালিকায় আছে কি-না যাচাই করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেখানে তার নাম না থাকলে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি ভূমিহীন হলে খোঁজ খবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের যে কোন সুযোগ সুবিধা তাকে পাইয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।