ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
এর ফলে আগামী ৫ জুন এই আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণে আর কোনও বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী এম. সাঈদ আহমেদ রাজা, আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ ও আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি।
অন্যপক্ষে ছিলেন- আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব ও ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম।
গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে এ আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নজরুল ইসলামের এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৬ মে হাইকোর্ট উপনির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) নৌকার প্রার্থী আব্দুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু ওই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনায় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ঘোষিত ফলাফল বাতিল করতে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল বিশ্বাসকে বিজয়ী ঘোষণার দাবিতে করা ইলেকশন পিটিশন হাইকোর্টে বিচারাধীন।
বিচারাধীন ইলেকশন পিটিশন নিষ্পত্তির আগেই উপ-নির্বাচন হয়ে গেলে পিটিশনটি অকার্যকর হয়ে যাবে। সেজন্য উপ-নির্বাচন স্থগিতের আবেদন জানায়। হাইকোর্ট ২১ দিনের জন্য এই উপ-নির্বাচনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। একইসঙ্গে আগামী রবিবার থেকে ইলেকশন পিটিশনের উপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ওই আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. নায়েব আলী জোয়াদ্দার। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত বুধবার আদেশ দেন।
ভোটে কারচুপির অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাস দুলালের পক্ষে হাইকোর্টে করা ইলেকশন পিটিশনে বলা হয়, ভোট গ্রহণ শেষে ৭ জানুয়ারি বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঝিনাইদহ-১ আসনে ৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানানো হয়।
কাস্টিং ভোটের ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সই করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ ছিল।
কিন্তু ওই আসনের চূড়ান্ত ফলে ৯ শতাংশ ভোট বেড়ে যায়। ওই আসনে ৫৮ দশমিক ২৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এ কারণে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৮ ভোট কাস্টিং দেখানো হয়, যা প্রথম প্রতিবেদনের চেয়ে বেশি ২৮ হাজার ৩৮৯ ভোট। এসব ভোট নৌকা প্রতীকে কাস্টিং দেখানো হয়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়।
এরপর ৮ জানুয়ারি ভোটের ফলের গেজেট স্থগিত রাখতে এবং ১০ জানুয়ারি জারিকৃত গেজেট বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী। কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী এসব ঘটনা তুলে ধরে হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দুলাল বিশ্বাস।
পরে ওই পিটিশনের শুনানি নিয়ে গত এক ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই মাসের জন্য আব্দুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণার গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
একইসঙ্গে এই নির্বাচনে কারচুপি করে ফল ঘোষণার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্বাচন কমিশন, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং কর্মকর্তা, ইউএনওসহ ১৭ বিবাদীর প্রতি নোটিশ জারি করেন। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
এদিকে ইলেকশন পিটিশন নিষ্পত্তির আগেই আব্দুল হাই মারা যান। ফলে ওই আসনে উপ-নির্বাচনের ঘোষণা দেয় ইসি।
——ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ