নিজস্ব প্রতিবেদক :
টানা ভারী বর্ষণে দেশের পার্বত্য অঞ্চল পাহাড়ধসের আশঙ্কা বাড়ছে। তাতে প্রাণহানির শঙ্কাও তীব্র হচ্ছে। বান্দরবানে গত রোববার দুই স্থানে পাহাড় ধসে শিশুসহ আহত হয়েছে ছয়জন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধস আরও ভয়ংকর হতে পারে। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পাহাড় থেকে গত দু’দিনে ১ হাজার ৫০ পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে। গত রোববার জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা ৮০০ পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে। এর আগে আরেক দফায় ২৫০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। নগরের আকবর শাহ ও খুলশী থানা এলাকার সাতটি পাহাড়ে টানা অভিযান পরিচালনা করে লোকজনকে সরিয়ে আনা হয়। প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে পাহাড় ধসে একই পরিবারের শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছে। রোয়াংছড়ি উপজেলার ছাইংগ্যা দ্যানেশপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে মাটিসহ বাড়ির একাংশ রাস্তার ওপর পড়েছে। এতে আহত হয়েছে দু’জন। বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে জেলা শহরসহ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাহাড় ধসে মাটি চিম্বুক, রুমা ও থানচি সড়কের ওপর পড়েছে। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরে গিয়ে লোকজন যাতে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয় সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে কলাবাগান এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। অবশ্য তাতে কেউ হতাহত হয়নি। খবর পেয়ে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কের মাটি অপসারণ করে যানবাহন চলাচল সচল রেখেছে। এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে ও ভেদভেদী-রাঙাপানি সড়কে পাহাড় ধসে পড়ে। টানা বৃষ্টিতে জেলার নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরো পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। জেলা প্রশাসন রাঙামাটি শহরে ২৯টি স্পটকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ও ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাহাড়ে বসবাসরতদের মাইকিং করে সচেতন করতে ও নিরাপদ স্থানে সরাতে জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছে।
সূত্র আরো জানায়, পাহাড়ধসে প্রাণহানি এড়াতে চট্টগ্রামের বিজয়নগর পাহাড়, ঝিলের তিনটি পাহাড়, শান্তিনগর ও বেলতলীঘোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব পাহাড় থেকে ৫০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া খুলশী থানার মতিঝর্ণা পাহাড় থেকে আরও ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনা মানুষকে শুকনো খাবার থেকে শুরু করে প্রতি বেলার খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার আকবর শাহ থানার বিজয়নগর ও ঝিল পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়। টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি