জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:
দিন দিন সিলেট নগরীতে করোনার টিকাদানে বাড়ছে মানুষের আগ্রহ। প্রতিদিন করোনার টিকা নিতে নগরীর অনেক মানুষ ‘সুরক্ষায়’ (করোনার টিকা নিতে নিবন্ধন সাইট) নিবন্ধন করছেন। এতে করে চাপ বাড়ছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) স্বাস্থ্য শাখার উপর। টিকার চাপ সামলাতে সিসিক অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে।
সিসিকের সংশ্লিষ্ট শাখা জানায়, দ্বিতীয় দফার টিকাদানে শনিবার (৩১ জুলাই) সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (৩১ জুলাই) একদিনে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে মোট ৩১ শ’ ৯১ জনকে দেওয়া হয়েছে করোনার টিকা। তন্মধ্যে ৩ হাজার ৫১ জন নিয়েছেন টিকার প্রথম ডোজ (মডার্না)। আর ১৪০ জন নিয়েছেন সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজের টিকা।
জানা গেছে, সিলেট মহানগরীতে এ পর্যন্ত করোনার টিকা নিয়েছেন (প্রথম্ ডোজ) প্রায় ৯০ হাজারের মতো। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪৯ হাজারের মত মানুষ। তাদেরকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা, আমেরিকার মডার্না ও চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আমেরিকার তিরি মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী সিলেট নগরীর দুই হাসপাতালে মডার্নার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে এখন।
এদিকে, বর্তমানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করায় বাড়ছে সিসিকের উপর চাপ। মাত্র দুই হাসপাতালে টিকা দেওয়ার ফলে নিবন্ধনের পর টিকা পেতে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে মানুষকে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৩২ হাজার মানুষ টিকা পেতে অপেক্ষা করছেন বলে জানান সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সুমন।
সিসিক সূত্র জানায়, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেতে সিলেট নগরীতে আরো কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষা করছেন। এই টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ৩ মাস পার হওয়ার পর এখন দ্বিতীয় ডোজ আগামী দুই এক দিনের মধ্যে শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকা সরকার জাপান থেকে ইতিমধ্যে দুইটি চালান নিয়ে এসেছে। সিলেট নগরীর দুই হাসপাতালে টিকার বর্তমান চাপের পাশাপাশি অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজে দেওয়া শুরু হলে চাপ আরো বেশি বাড়বে বলে আশংখ্যা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টিকার চাপ সামলাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতিমধ্যে ১২টি বুথ করা হয়েছে। টিকা নিতে আসা মানুষের মাঝে যেন কোনো ভীড় না লাগে এ জন্য বুথ বাড়ানো হয়েছে।
সিলেট নগরীতে টিকাদান প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত) ডা. জাহিদুল ইসলাম সুমন জানান, ব্যাপক হারে মানুষ প্রতিদিন টিকার জন্য নিবন্ধন করছেন। আমরা হিসেব করে টিকা পেতে প্রতিদিন মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠাচ্ছি। যাতে করে টিকা পেতে মানুষের মধ্যে কোন ভীড় না লাগে।
তিনি বলেন, সরকার যদি আগামী ৭ আগস্ট থেকে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করে তাহলে সিসিকের পক্ষ থেকে ৫৪টি কেন্দ্রে টিকাদান পরিচালনা করা হবে। কোনো কোনো ওয়ার্ডে ২টি কেন্দ্র আবার কোনোটিতে (জনসংখ্যার ভিত্তিতে) ৩টি কেন্দ্র করা হবে।
তবে সরকারের হিসেব অনুযায়ী ৮৭টি কেন্দ্র পর্যন্ত করা যেতে পারে বলে জানান সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি