অনলাইন ডেস্ক :
পরিবর্তনের ভেলায় চেপে বাংলাদেশ পাড়ি দিতে চাচ্ছে টি-টোয়েন্টির কঠিন পথ। নেতৃত্বে ফেরানো হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। টেকনিক্যাল কানসালটেন্ট করে আনা হয়েছে শ্রীধরন শ্রীরামকে। লাভ তাতে কতটা হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা বলে দেবে সময়। তবে এই মুহূর্তে বাস্তবতার জমিনেই পা রাখছেন সাকিব। সহসা উন্নতির আশা না করে ধৈর্য ধরতে বলছেন এই অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব পাওয়ার পর সাকিব প্রথমবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন গত শনিবার একটি অনুষ্ঠানে। সেখানেই তিনি শুনিয়ে দেন, তার নেতৃত্বে ফেরা কিংবা শ্রীরামের আগমণে এখনই আশার বেলুন ফোলানোর মতো কিছু হয়নি। কঠিন এক সময়ে অধিনায়কত্ব ফিরে পেলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর নানা উদ্েযাগেও নেই উন্নতির কোনো আভাস। সব মিলিয়ে সবশেষ ১৫ ম্যাচে জয় কেবল দুটি। নিজেদের খুঁজে ফেরা দলটির আগামী কয়েক মাসে খেলতে হবে এশিয়া কাপ, নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কি হবে লক্ষ্য? নতুন অধিনায়ক কোনো নতুন আশা না দেখিয়ে চাইলেন সময়। “আমার কোনো লক্ষ্য নেই। আমার লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বকাপে গিয়ে যেন আমরা ভালো করতে পারি। তার প্রস্তুতি হিসেবে এগুলো। আমি যদি মনে করি যে, একদিন-দুদিনে কিছু বদলে দিতে পারব কিংবা অন্য কেউ এসে বদলে দেবে, তাহলে আমরা আসলে বোকার রাজ্যে বাস করছি।” “আমাদের যদি বাস্তবিক চিন্তা আপনি করেন, আশা করি তিন মাস সময়, যখন আমরা বিশ্বকাপ খেলব। একটা যদি উন্নতি দেখতে পারেন দল থেকে, ওটাই আমাদের আসল উন্নতি।” ২০১৯ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। নানা ধাপ পেরিয়ে আবার এসেছে চক্র পূরণের অধ্যায়। কিছুদিন আগে পেয়েছেন টেস্টের নেতৃত্ব, এখন টি-টোয়েন্টির। মানসিক তৃপ্তিও তাই আছে তার। “দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা তো সব সময়ই গর্বের বিষয়। আমি খুবই আনন্দিত, রোমাঞ্চিত এবং নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেকে প্রস্তুত বলে মনে করি।” টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বের পাশাপাশি আরেকটি বড় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। দলে যুক্ত করা হয়েছে টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট। সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার শ্রীরাম আপাতত কাজ করবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে ৬ বছর সহকারী কোচের কাজ করার পাশাপাশি আইপিএলে নানা দলে কাজ করেছেন তিনি। তবে শ্রীরাম এসেই ভোজবাজির মতো সব পাল্টে দেবেন, এমন কিছুর আশা করছেন না সাকিব। “আমরা মনে হয় না, খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করার আছে এখানে। যেহেতু তিনি (শ্রীরাম) অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে পাঁচ বছর ছিলেন, আর আমাদের বিশ্বকাপটাও অস্ট্রেলিয়াতে, তার অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে আসবে। এশিয়া কাপে কতটুকু কাজে আসবে বলাটা মুশকিল। খুবই সল্প সময়।” “আমি যেটা বললাম যে, এখানে আমাদের সবার একটা দায়িত্ব আছে যার যার জায়গা থেকে। কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে সাপোর্ট স্টাফ, বিসিবি, মানুষ, আপনারা সবাই যদি একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে আমার কাছে মনে হয় যে, একটা পথযাত্রা শুরু হবে।” টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৬ বছর হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এই সময়েও নিজস্ব কোনো ঘরানা তৈরি করতে পারেনি তারা। কীভাবে এই সংস্করণে খেলা উচিত, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছে এখনও। সাকিব মনে করছেন, এত দিন পরেও আবার যেন শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে তাদের। “আমরা বোধহয় প্রথম খেলি ২০০৬ সালে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত খুব বেশি একটা ভালো ফল নেই, শুধু এশিয়া কাপে ফাইনাল বাদে। সে জায়গা থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি এই সংস্করণে।” “তাই আমাদের নতুন করে শুরু করা ছাড়া উপায় নেই। আর একটা বাচ্চা যখন চলা শুরু করে, তার স্টেপগুলো খুব কঠিন হয়, আস্তে আস্তে জিনিসগুলো সহজ হতে থাকে। আশা করি, ছোট একটা বাচ্চার মতো আমরা ‘স্টেপ বাই স্টেপ’ চলা শুরু করতে পারব এবং আস্তে আস্তে দৌড়ানোর জায়গাতে পৌঁছাতে পারব।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা