জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ (ঈশ্বরগঞ্জ) :
নির্ধারিত সময়ে টেন্ডার আহবান করে গাছ কর্তন না করায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বন বিভাগের প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও বন রক্ষণাবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট সদস্যরা।
সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শিমুলতলী হতে উচাখিলা রাস্তার নারায়নপুর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে বিভিন্ন স্থানে মূল্যবান গাছ মরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। আবার কিছু গাছ ঝড়ে উপড়ে পড়ে এবং বিদ্যুতের তার ও কুটির উপর বিপদজনক অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
উপজেলার বড়হিত ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, তার আমলে ১৯৯৪ সালে বনবিভাগ রাস্তার দু’পাশে মেহগনি, সেগুন, শিশু ও আকাশি জাতের ২হাজার চারা গাছ রোপন করে। পরে বনবিভাগ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী স্থানীয় নারীদের নিয়ে স্ট্রীপ বাগান সমিতি গঠন করে দশ বছর মেয়াদে গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও গাছগুলো কর্তন না করায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে দুই শতাধিক গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্ট্রীপ বাগান সমিতির সভাপতি নুরজাহান বেগম, সদস্য মালেকা, আছিয়া খাতুন ও এলাকাবাসী কছুম উদ্দিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এক একটি গাছের মূল্য হবে প্রায় ২০থেকে ২৫ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ২শ গাছের গড় মূল্য হবে ৪৫ লক্ষ টাকা। নির্ধারিত সময়ে গাছ কর্তন না করায় সরকার ও উপকারভোগিরা বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্ট্রীপ বাগান সমিতির সম্পাদক শাহীদা বেগম জানান, ২৭ বছর আগে ৯৪সালে উপজেলা বন বিভাগ প্রান্তিক ভূমি ও বন শূন্য অন্তবর্তী এলাকায় বনায়নের লক্ষ্যে উচাখিলা রাস্তায় বৃক্ষ রোপন করে। রাস্তার গাছ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দরিদ্র উপকারভোগী সদস্যদের সাথে এক চুক্তি স্বাক্ষর করে বন বিভাগ।
চুক্তিপত্র সূত্রে জানা যায়, গাছ রোপনের ১০ বছর পর টেন্ডার আহবান করে গাছগুলো কর্তন করে বিক্রয়লব্ধ টাকার শতকরা ৬৫ ভাগ পাবে উপকারভোগী সদস্যরা। বাকী ৪৫ শতাংশ পাবে বন বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ ও সড়ক বিভাগ।
কিন্তু চুক্তিপত্রের নির্ধারিত ১০ বছরের স্থলে ২৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও বন বিভাগ টেন্ডার আহবানে বিলম্ব করায় গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেশকিছু গাছপালা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের উপর পড়ে আছে। সামান্য ঝড় হলে গাছপালা ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা বন বিভাগের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজা জেসমিন জানান, এ রাস্তায় যাওয়ার পথে গাছগুলো মরে যাওয়ার বিষয়টি আমার নজরে আসে। রাস্তার গাছগুলো দ্রুত কর্তনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তাকে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার লুৎফর রহমান জানান, বিভাগীয় কাজের ব্যস্ততার কারণে নির্ধারিত সময়ে টেন্ডার আহবান করা সম্ভব হয়নি। তবে ডিসেম্বর মাসেই টেন্ডার আহবান করে গাছগুলো কর্তন করা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি