অনলাইন ডেস্ক :
সবশেষ টেস্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত, এবার লড়াই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে। মানের দিক থেকে দুই দলের পার্থক্য অনেক, তবে বাংলাদেশের মানসিকতায় নয়। মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, একইরকম ‘ফোকাস’ ধরে রেখেই আইরিশদের বিপক্ষে খেলতে নামবে দল। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশও এখনও পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত কোনো শক্তি নয়। তবে এই কন্ডিশন, শক্তি-সামর্থ্য আর নানা বাস্তবতা মিলিয়ে স্বাগতিকরা অনেকটাই এগিয়ে আইরিশদের চেয়ে। টেস্টের আগে এবার সীমিত ওভারের দুই সিরিজেও তা স্পষ্ট হয়েছে। টেস্ট ম্যাচটি আইরিশদের জন্য হওয়ার কথা আরও কঠিন। প্রায় চার বছর বিরতির পর টেস্ট খেলতে নামবে তারা। মিরপুরের উইকেটও সিলেট-চট্টগ্রামের তুলনায় হতে পারে আরও চ্যালেঞ্জিং। এই দলের বিপক্ষে খেলতে নেমে আত্মবিশ্বাস যে বেশি থাকবে, তা অস্বীকার করলেন না মিরাজ। তবে এই ম্যাচকে গুরুত্ব কোনো অংশেই তারা কম দেবেন না বলে দাবি তার। “আমরা সবাই অনেক সিরিয়াস। ম্যাচ যখন খেলা হয় দেখবেন না যে, ভারতের সঙ্গে খেললে অনেক সিরিয়াস থাকে বা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেললে ফোকাস কম থাকে। ফোকাস একই রকম থাকে। হয়তো আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি কাজ করে অনেক সময়, অনেক সময় কম কাজ করে। প্রতিটা মানুষের আত্মবিশ্বাস কিন্তু ওঠা-নামা করে। এটা প্রতিটা মানুষের মানসিক ব্যাপার। সবসময় একই রকম আত্মবিশ্বাস থাকে না।” “ভারতের সঙ্গে ১০০ করলে রেকর্ড থাকবে ১০০ করেছে। আবার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে করলেও ১০০-ই থাকবে। খাতায় কিন্তু বদলাবে না। ওমুক দল বা তমুক দল- এরকম বলা হবে না। দিন শেষে এটিকেই আমরা এগিয়ে রাখি।” একমাত্র টেস্টের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ স্কোয়াডের ১৪ জনের মিলে রয়েছে ৪৭৩ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। অন্য দিকে আইরিশ স্কোয়াডের ৯ জনের এখনও টেস্ট অভিষেকই হয়নি। তিন জন পাননি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার স্বাদ। সবচেয়ে বেশি ৮ টেস্ট খেলা পিটার মুর দলে এসেছেন জিম্বাবুয়ে থেকে ঠিকানা বদল করে। বাংলাদেশ যে আয়ারল্যান্ডকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না, এটির একটি প্রমাণ অবশ্য পূর্ণ শক্তির দল ঘোষণা করাতেই। নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক রোববার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আয়ারল্যান্ডকে দাপট দেখিয়ে হারাতেই পূর্ণ শক্তির দল রেখেছেন তারা। মিরাজও বললেন সেই লক্ষ্যের কথা। তবে বড় জয়ের আগে যে জয়টা নিশ্চিত করা জরুরি, সেটিও তিনি মনে করিয়ে দিলেন। “অভিজ্ঞতার দিক থেকে হয়তো আয়ারল্যান্ডের অনেক বেশি টেস্ট খেলা হয়নি। আমরা টেস্ট ক্রিকেট অনেক দিন ধরে খেলছি। আমাদের অনেক ক্রিকেটার আছে। অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে ব্যবধানটা যেন ভালোভাবে জিততে পারি। তবে, দিন শেষে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ১ রানে জিতলেও জিতবেন, ১০০ রানে জিতলেও জিতবেন। প্রথম চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতা।” আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে একটা চাপও দলের সঙ্গী। তুলনামূলক কম শক্তির দলের বিপক্ষে জিতলে তেমন কৃতিত্ব পাওয়া যায় না। তবে হেরে গেলে সমালোচনা হয় প্রবল। মিরাজ অবশ্য বললেন, নেতিবাচক ভাবনায় না ডুব দিয়ে তারা মনোযোগ রাখছেন নিজেদের কাজে। “আন্তর্জাতিক খেলা তো আন্তর্জাতিক খেলাই। এক নম্বর দলের সঙ্গে খেললে যেমন অনুভূতি কাজ করে, দশ নম্বর দলের বিপক্ষে খেললেও একই রকম অনুভূতি কাজ করে। ফলাফল কী হবে, না হবে ওটা পরের বিষয়। আগের কাজটা আমাদের করতে হবে। আমরা ওটা নিয়ে কখনও চিন্তিত না যে, আমরা হারলে কী হবে বা না হবে। আমরা চেষ্টা করি সবসময় বর্তমানে থাকার জন্য। এখন কী হচ্ছে, কী করব এটার ভেতরেই চেষ্টা করি থাকার জন্য।” মিরাজ বরং মুদ্রার উল্টো পিঠও দেখালেন। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট এটিই। প্রতিপক্ষ তুলনামূলক অচেনা-অজানা বলেই মনোযোগ বেশি রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি। “অবশ্যই ছোট দলের সঙ্গে খেলতে গেলে কিছুকিছু জিনিস কনফিউশন থাকে। আমার কাছে মনে হয়, বড় দলের চেয়ে ছোট দলের সঙ্গে বেশি ফোকাস থাকে। ফোকাসটা বেশি থাকে এজন্য যে, আমাদের ব্যাক অব মাইন্ডে অবশ্যই হার-জিত তো থাকেই, তবে দিন শেষে ভালো করার যে উদ্যোগটা, এটা কিন্তু করতে হবে।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা