১৫ দফা দাবিতে ডাকা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দেশব্যাপী চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বৈঠকের পর এই প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তালুকদার মো.মনির এবং বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান- ট্রাক- প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মুকবুল আহমদ ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা নিশ্চিত করেছেন।
এসময় মালিক সমিতির মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহম্মদ, বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তালুকদার মো.মনির, জেনারেল সেক্রেটারি ওয়াজি উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
মো.মনির বলেন, আমাদের সাথে মন্ত্রীর বৈঠকে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট ও আনন্দিত। এজন্য আমরা আমাদের ৭২ ঘণ্টার যে কর্মসূচি ছিল সেটা প্রত্যাহার করে নিলাম।
মুকবুল আহমদ বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট। এজন্য আমরা ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এতক্ষণ আমাদের সিনিয়র সচিব জন নিরাপত্তা, আইজিপি, পুলিশ প্রধান সড়ক পরিবহন সচিব, নৌপরিবহন বন্দর সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট যতো মন্ত্রণালয় হাইওয়ে পুলিশসহ সকলে বসেছি। বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান- ট্রাক- প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক সমিতির এবং বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশন তাদের ১৫ টি দাবি দাওয়া আমাদের কাছে দিয়েছেন। আমরা তাদের দাবিগুলো যথাযথভাবে শুনেছি। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে যে দাবিগুলো মনে করেছি এখনই করা উচিৎ সেগুলোর বিষয়ে আমরা বলেছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যেগুলো মনে করেছি সময় লাগবে সেগুলোর বিষয়ে আমাদের সচিবরা নোট নিয়েছেন এবং তাদের মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যেটা ছিল সেটা হলো বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান একটা ট্রাক্সফোর্স গঠন করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা সমাধান করবেন। এছাড়া অন্যান্য দাবিগুলো নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হওয়ার পড়ে তারা বলেছেন তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা যেসকল কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন সেগুলো ওনাদের মুখেই শোনবেন ওনারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ দেশব্যাপী ধর্মঘট ডেকেছিল।
১৫ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মোটরযান মালিকদের ওপর চাপিয়ে দেয়া বর্ধিত আয়কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করা, যেসব চালক ভারী মোটরযান চালাচ্ছেন তাঁদের সবাইকে সহজ শর্তে এবং সরকারি ফির বিনিময়ে লাইসেন্স দেয়া, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে পুনরায় হয়রানিমূলক ফিটনেস ও পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল, সব শ্রেণির মোটরযানে নিয়োজিত শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় রেশন-সুবিধার আওতায় আনা, সব বন্দরে অবস্থিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মনোনীত প্রতিনিধি এবং সব ড্রাইভার ও সহকারীকে বন্দরে হয়রানিমুক্ত প্রবেশের সুবিধার্থে বার্ষিক নবায়নযোগ্য বায়োমেট্রিক স্মার্টকার্ড দেয়া, গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা, যেখানে-সেখানে গাড়ি চেকিং না করা, পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সব ধরনের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ, প্রতি ৫০ কিলোমিটার পর পর পণ্য পরিবহনে শ্রমিকদের জন্য দেশের সড়ক ও মহাসড়কে বিশ্রামাগার ও টার্মিনাল নির্মাণ, সড়ক দুর্ঘটনায় অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুবরণকারী সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে এককালীন ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিতে ধর্মঘট ছিয়েছিলেন ট্রাক মালিক ও শ্রমিকেরা।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ