April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, March 30th, 2022, 8:02 pm

ডারবানের দুঃস্মৃতি বাংলাদেশের বিপক্ষে মুছতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা

অনলাইন ডেস্ক :

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। সিরিজের প্রথম টেস্টটি হবে ডারবানের কিংসমিডে। সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে ডারবানের কিংসমিডে দক্ষিণ আফ্রিকার পারফরমেন্স মোটেও ভালো নয়। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট দিয়ে ডারবানের দুঃস্মৃতি মুছতে চায় প্রোটিয়ারা। ডারবানের এই ভেন্যু পেসরাদের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ঐতিহ্যগত শক্তিতে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং। ডারবানে সর্বশেষ নয় টেস্টের মধ্যে ১টিতে জয়, সাতটিতে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১টি টেস্ট ড্র হয়। গত ১৩ বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র জয় ২০১৩ সালে। ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল প্রোটিয়ারা। ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচ ড্র করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দু’দিনে ঐ টেস্টে মাত্র ৮৯ দশমিক ৪ ওভার খেলা হয়েছিলো। তাই পরিসংখ্যানের বিচারে ডারবান ও পোর্ট এলিজাবেথে (দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু) টেস্ট হওয়াতে অখুশি দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। কারণ এই দুই ভেন্যুতে জয়ের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে প্রোটিয়াদের। কিন্তু জয়ের সংখ্যা হাতে গোনা। এলগার বলেন, ‘সূচি এবং ভেন্যু নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। আশা করি ভবিষ্যতে এটি পরিবর্তন হতে পারে।’ তবে ডারবানের উইকেটে ঘাস দেখে খুশি এলগার। তিনি আশা করছেন, ম্যাচের আগে ঘাস কাটার পরও অনেকটাই অবশিষ্ট থাকবে। এলগার বলেন, ‘তারা যা করেছে, তার সাথে আমি খুব বেশি পরিচিত নই। তবে মনে হচ্ছে কিংসমিডে ঘাস কিছুটা বেড়েছে। আশা করি, তারা এটি সুন্দর করবে এবং আরও বেশি গতি এবং বাউন্স তৈরি করতে পারবে।’ যদি এলগারের আশা পূরণ হয়, তবে পুরনো কিংসমিডকে দেখা যেতে পারে। যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড, ১৯৯৬/৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ৫৪ রানে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন। ঐ টেস্টে ভারতযথাক্রমে ১০০ ও ৬৬ রানে অলআউট হয়েছিলো। এমনকি উইকেটে গতি আনা হলেও দলের শীর্ষ পেসার কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি এবং মার্কো জানসেনকে ছাড়াই লড়াইয়ে নামতে হবে এলগারকের। ইনজুরির কারণে সিরিজে নেই এনরিচ নর্টি।
ইংল্যান্ডের কোলপাক চুক্তি থেকে জাতীয় দলে ফিরলেও, বল হাতে গতি হারিয়েছে পেসার ডুয়াইন অলিভিয়ার। তাই বর্তমান দলে অভিজ্ঞ টেস্ট পেসার লুথো সিপামলা এবং গ্লেন্টন স্টুরম্যান। দু’জনে মিলে ১৩ উইকেট নিয়েছেন, যথাক্রমে তিনটি এবং একটি করে টেস্ট খেলেছেন তারা। এলগার জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং কম্বিনেশনে দুই স্পিনারকে রাখার পরিকল্পনা আছে। এতে বাঁ-হাতি স্পিনার কেশব মহারাজের সাথে দেখা যেতে পারে ছয় বছর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা অফ-স্পিনার সাইমন হার্মারকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় আগের তিনটি সফরে ছয়টি টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পাঁচটিই ইনিংস ব্যবধানে কিন্তু এবারের সফরের শুরুতে ওয়ানডে সিরিজ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয়ের খড়া কাটায় বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম ইকবাল। আর টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিবেন মোমিনুল হক। তবে টেস্টে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবে বড় ভূমিকা রাখবেন তামিম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন এবং মুস্তাফিজুর রহমান টেস্ট স্কোয়াডে না থাকায় ওয়ানডে দল থেকে কমপক্ষে চারটি পরিবর্তন করতে হবে বাংলাদেশকে। সেই সাথে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ থাকায় দেশে ফিরে আসেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাই প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না সাকিব। গত জানুয়ারিতে বিশ^ চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের মােিটিত তাদেরকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতেও জিততে পারে, সেটিও প্রমান করে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের নায়ক এবাদত হোসেনের সাথে ডারবান টেস্টে বোলিং আক্রমনে থাকছেন তাসকিন আহমেদ-শরিফুল ইসলাম। এরা দু’জনই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দারুন পারফরমেন্স করেছেন। অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে টাইগাররা। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটি খর্বশক্তির। বাংলাদেশকে হারাতে হলে মাঠে নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
বাংলাদেশ দল : মোমিনুল হক (অধিনায়ক), আবু জায়েদ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল হাসান জয়, মেহেদি হাসান, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, নুরুল হাসান, সাদমান ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ ও ইয়াসির আলি।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল : ডিন এলগার (অধিনায়ক), তেম্বা বাভুমা, ড্যারিন ডুপাভিলন, সারেল এরউই, সাইমন হার্মার, কেশব মহারাজ, উইয়ান মুলডার, ডুয়েন অলিভিয়ার, কিগান পিটারসেন, রায়ান রিকেল্টন, লুথো সিপামলা, গ্লেণটন স্টুরম্যান, কাইল ভেরিনি (উইকেটরক্ষক), লিজাড উইলিয়ামস ও কায়া জন্ডো।