April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, November 13th, 2021, 6:08 pm

ডুমুরিয়ায় ইউপি সদস্য হলেন তৃতীয় লিঙ্গের শাহিদা

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার ছয় নম্বর মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের নারী সংরক্ষিত সদস্য পদে হিজড়া সম্প্রদায়ের শাহিদা বিবি (৪৩) ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ইউনিয়নের চার,পাঁচ ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন।

শাহিদা ডুমুরিয়ার ছয় নম্বর বেতাগ্রাম সদর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চুকনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোড়লের মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এখানে বসবাস করছেন।

দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে ১১ নভেম্বর শাহিদা বিবি সংরক্ষিত ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।চারজন নারী প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে,মাইক প্রতীক নিয়ে বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হন তিনি। শাহিদা মাইক প্রতীকে পান দুই হাজার ৭৪০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাইলা বেগম পেয়েছেন এক হাজার ৭১৪ ভোট।

বিজয়ী হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে শাহিদা বলেন, জনগণের ভালোবাসায় আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকদের অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আর সবসময়ই গরিব, দুঃখী ও বঞ্চিত লোকদের পাশে থাকব। আমি কোনওদিন কোন মানুষকে কটু কথা বলিনি। কাউকে বিরক্ত করিনি। যে কারণে মানুষ আমাকে মূল্যায়ন করেছে।

তিনি আরও বলেন, হিজড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে মানুষের চিন্তা পাল্টে দিতে চাই। সমাজে আমরা অবহেলিত হওয়া সত্ত্বেও জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে সমাজে একটি স্থান দিয়েছে। তাই এলাকার সব ভোটারদের কাছে আমি ঋণী। সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডে তৃতীয় লিঙ্গের আর একজন ভোটার ছিল মুক্তা মনি। সে সব সময় আমার নির্বাচনী কাজে সহযোগিতা করেছে। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভোটের দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭-৮ জন হিজড়া এসে আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। তাদেরকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

শাহিদা বলেন, খুলনায় ইউপি নির্বাচনে আমি প্রথম বিজয়ী হয়েছি। আমার বিজয়ে জনগণের সাথে সাথে পিতা-মাতাও ভীষণ খুশি।

আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে শাহিদা বলেন, এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে তার প্রতিদান দিতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।

তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র ভোটার মুক্তা মনি বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শাহিদা বিবির পক্ষে ভোট চেয়েছি। তারা আমাদের মূল্যায়ন করেছে। এর চেয়ে আর বড় কিছুই চাওয়া পাওয়া নেই।

২০০৯ সালের ডিসেম্বরে হিজড়াদের ভোটাধিকার দেয়া হয়। ২০১৩ সালে হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পায়। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ভোটার তালিকায় নারী ও পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে আরেকটি পরিচয় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।

–ইউএনবি