নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব ও সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা শহরের সব ভবন ও স্থাপনার নিরাপত্তা, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং গ্যাসলাইন পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঢাকার দুই সিটির সব ওয়ার্ডে বিশেষজ্ঞসহ সাত সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশে দেন। আদালত এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে রাজউকের চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী পরিচালককে সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত। স্থাপনা বা ভবনে কোনো ত্রুটি থাকলে সেগুলো মেরামত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি আট সপ্তাহ পর পর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী ১৬ মে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত চার সপ্তাহের রুল জারি করে ঢাকা শহরে বসবাসকারী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরে বসবাসকারী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানাতে বলেছেন। গত ৫ মার্চ সায়েন্সল্যাব এলাকায় এবং ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে পৃথক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ বিস্ফোরণের পর ঢাকা শহরের স্থাপনা/ভবনগুলোর নিরাপত্তা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ১২ মার্চ একটি রিট দায়ের করে। এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মো. মোদাচ্ছের আলী খান (দিপু)। শুনানিতে এইচআরপিবির পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সায়েন্সল্যাব ও সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণের প্রধান কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহের অবহেলা। ঢাকা শহরে হাজার হাজার স্থাপনা/ভবন রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পয়োনিষ্কাশন ও গ্যাসের লাইন বিদ্যমান রয়েছে। সেসব পয়োনিষ্কাশন ও গ্যাসের লাইন তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ এ ব্যাপারে সক্রিয় নন। তাদের এ নিষ্ক্রিয়তা হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। জনগণের জীবন বাঁচাতে এসব পয়োনিষ্কাশন ও গ্যাসলাইন দ্রুত তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন আদালত। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সচিব, বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, রাজউকের চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তরের প্রধান নির্বাহী পরিচালক, ঢাকা দক্ষিণের প্রদান নির্বাহী পরিচালক ও ডিএমপি পুলিশ কমিশনারসহ মোট ৯ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম