November 14, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, March 20th, 2022, 8:22 pm

ঢাকা-ওয়াশিংটন ৮ম অংশীদারিত্ব সংলাপ শুরু

বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার অষ্টম ‘অংশীদারিত্ব সংলাপ’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রবিবার সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত এই দ্বিপক্ষীয় সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এটাই প্রথম দুই দেশের মধ্যে হওয়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।

এই সংলাপের মাধ্যমে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ বোঝাপড়া’ করতে চায় এবং ব্যবধান দূর করে সম্পর্কের পরিধি আরও বাড়াতে চায়।

আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরুর আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেন ও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নুলান্ড একই ভেন্যুতে তেতে-এ-তেতে কথা বলেন।

বাংলাদেশ সংলাপে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উত্থাপন করবে। কারণ বাংলাদেশের দাবি, নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘অযৌক্তিক এবং একটি বিশেষ মহলের করা বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের ভিত্তিতে এগুলো আরোপ করা হয়েছিল’।

গত ১০ ডিসেম্বর র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর,বাংলাদেশ অবিলম্বে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অনেকগুলো কারণ ও নির্ধারক রয়েছে। আগামীতে বেশ কয়েকটি সংলাপ,পারস্পরিক সফর এবং ট্র্যাক-টু সম্পৃক্ততার মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও গভীর ও বিস্তৃত হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্ক ‘বৃদ্ধি ও গভীর’ করার ব্যাপারে বাংলাদেশ আন্তরিক। এই লক্ষ্যে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ বোঝাপড়া গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি।

অন্যদিকে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড অংশীদারিত্ব সংলাপের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

নুল্যান্ড দক্ষিণ এশিয়ায় তার ত্রিদেশীয় সফরের অংশ হিসেবে ঢাকায় এসছেন। এরপর তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফর করবেন। সেখানে তিনি সমগ্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করবেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯-২৩ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় সফরের সময় নুল্যান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং সহযোগিতার ওপর জোর দেবেন।

আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় ‘অংশীদারিত্ব সংলাপ’ ও নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র দপ্তরে কনসাল্টেশনে অংশ নেবেন।

নুল্যান্ড এবং প্রতিনিধিদল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে এবং সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সুশীল সমাজ এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।

প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সিনিয়র সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু ও নীতি বিষয়ক উপ-আন্ডার সেক্রেটারি আমান্ডা ডরি।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আসন্ন ‘অংশীদারিত্ব সংলাপ’কে দুই দেশের মধ্যে ‘দৃঢ় সম্পর্ক’ প্রসারিত করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে।

দুই পক্ষই মনে করে সম্পর্কের বহুমুখী দিক কোনো একক ইস্যু দ্বারা ব্যাহত হবে না।

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সম্পূর্ণ ধারা-নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য, শ্রম অধিকার, বিনিয়োগের সুযোগ, মানবাধিকার, শাসন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বৈশ্বিক হুমকি, একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ আঞ্চলিক সমস্যাগুলো সবই সংলাপের পরিধির মধ্যে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা বলেন, সংলাপে আমরা শক্তিশালী সম্পর্ক সম্প্রসারণের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করব। কিভাবে আমরা সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও বাড়াতে পারি।

সাংবাদিকদের জানান,বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক বর্তমানে সরকার-থেকে-সরকারে সীমাবদ্ধ নেই। এখন দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ওই কূটনীতিক বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের এই পঞ্চাশতম বছরে ওয়াশিংটন বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও দ্বৈত স্বার্থের ভিত্তিতে নির্মিত ‘একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী সম্পর্ককে আরও গভীর করতে’ চায়।

মার্কিন দূতাবাসের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ধারাবাহিক অংশীদার হয়ে আছে।

এদিকে, ৪ এপ্রিল ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক (ব্যক্তিগতভাবে) করার কথা রয়েছে।

—-ইউএনবি