বাংলাদেশে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর বলেছেন, ঢাকা মেট্রোরেল এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আংশিক চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে উত্তরা থেকে মতিঝিলের যাত্রীদের যাতায়াতে নাগরিকদের সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, ‘এমআরটি একটি খুব ভাল উদ্যোগ এবং এটি শহুরে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে৷ আমি এখানকার কাজের মান দেখে মুগ্ধ।’
বৃহস্পতিবার উত্তরায় প্রকল্পের সাইট পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অতীতে তারাও (থাইল্যান্ডে) ট্রাফিক সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তেন, তবে থাইল্যান্ডে এমআরটি বাস্তবায়ন এ সমস্যা সমাধানে অনেক সাহায্য করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের (দুই দেশের মধ্যে) অর্থনৈতিক অনেক বিষয়ে সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে। এই প্রকল্পটি একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প।’
তিনি আরও বলেন, (মেট্রোরেল প্রকল্পের) কাজের মান বজায় রয়েছে।
রয়্যাল থাই দূতাবাস বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ‘ট্রেসিং থাইল্যান্ড @ ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এমআরটি)’–র আয়োজন করা হয়।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার বিস্তৃত দেশের প্রথম মেট্রোরেল লাইন ঢাকা এমআরটি-এর লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ পরিদর্শনে রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর সাংবাদিকদের একটি দলকে নেতৃত্ব দেন।
এর আগে প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও রুটটি চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত হবে এবং আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হবে।
নির্মাণ পর্যায়ে প্রকল্পটি সিপি-০১ থেকে সিপি-০৮ পর্যন্ত আটটি চুক্তিতে বিভক্ত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ট্রেসিং থাইল্যান্ড @ ঢাকা এমআরটি’ বাংলাদেশের উন্নয়নে থাইল্যান্ডের সম্পৃক্ততা এবং অবদান সম্পর্কে জনসাধারণকে আরও জানাতে দূতাবাসের একটি প্রচেষ্টা।
এসময় রাষ্ট্রদূত ও সাংবাদিকেরা উত্তরায় সিপি-০৩ সাইট পরিদর্শনে যান। এটি থাইল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ কোম্পানি ‘ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি পিএলসি (আইটিডি) নির্মিত।
তিনি বলেন, তার দেশ বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে থাই কোম্পানির সম্পৃক্ততা রয়েছে।
প্রতিনিধি দলটিকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক বিরাট কান্ত স্বাগত জানান। এসময় বিরাট জানান, ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি পিএলসিকে (আইটিডি) ২০১৭ সালে সিপি-০৩ এবং ০৪ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়, যার নির্মাণ ব্যয় ৩৭ বিলিয়ন টাকা।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি এলিভেটেড স্টেশন এবং ভায়াডাক্ট রয়েছে এই প্রকল্পে। আইটিডি অন্যান্য চুক্তিতে কাজ করার জন্য বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকায় থাই দূতাবাস জানিয়েছে, নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে আইটিডি প্রায় ছয় হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা এমআরটি উন্নয়ন প্রকল্প ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রকল্প।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইন-১-এর সঙ্গে সংযোগের জন্য এমআরটি লাইন ৬ আরও এক দশমিক ১৭ কিলোমিটার প্রসারিত করা হবে।
আইটিডি থাইল্যান্ডে এবং বিদেশে অসংখ্য অবকাঠামো প্রকল্প যেমন সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর, খুলনার রূপসা সেতু, কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি সমন্বিত যাত্রী টার্মিনাল এবং পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় মহাসড়ক রুট এনএইচ-৩১সি-এর নির্মাণে সম্পৃক্ত ছিল।
এছাড়াও আইটিডি মারিয়ালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের সংস্কার কাজেও সহায়তা করেছে, যা বাংলাদেশের দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটি; যেগুলো রাজকুমারী মহা চক্রী সিরিন্ধর্নের পৃষ্ঠপোষকতায় শিশু ও যুব উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম