জেলা প্রতিনিধি, পাবনা :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়র ১ম বর্ষের নির্যাতিত শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন সে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার শিবপুরে নিজ গ্রামের বাড়ীতে রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় মুঠাফােনে কথা হয় তার সাথে। সে সময় তিনি পাবনা শহরে তার মামার বাসা থেকে গ্রামের বাড়িতে শিবপুর যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব। এর বেশী এখন কিছু বলতে পরছি না।’
এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে, সব তদন্ত কমিটির কাছে বলেছি। তাঁরা খুব মনোযোগের সঙ্গে আমার বক্তব্য শুনেছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, আমার সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে, তার বিচার পাব। ক্যাম্পাসে আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। তদন্তের প্রয়ােজনে সে আবার ক্যাম্পাসে যাবেন।
গত শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে হাজির হয়ে তদন্ত কমিটির কাছে তাঁর ওপর চলা নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগর প্রথম বর্ষর এই শিক্ষার্থী। ওই দিনই তিনি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।
১২ ফেব্রুয়ারী রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে তাকে সাড়ে চার ঘণ্টা আটক রেখে নির্যাতন করার অভিযােগ করেন ফুলপরী খাতুন। তিনি বলেন, রাত ১১টার দিক আমাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং রাত আনুমানিক ৩টা পর্যন্ত নির্যাতন চালানাে হয়। ভুক্তভাগী ছাত্রীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগর সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্ব তাঁর অনুসারীরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়া হয়। ওই ছাত্রী গত বুধবার দুপুর বিশ্ববিদ্যালয়র প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভাগী ছাত্রী বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারী প্রথম বর্ষর ক্লাস শুরু হয়। এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারী তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে তিনি দেশরতত্ন শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক ছাত্রীর কাছে অতিথি হিসেবে থাকেন। বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুম নবীন শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান, কারা দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে থাকেন। এ সময় ওই ছাত্রী হাত তােলেন। হলে ওঠার বিষয়টি আগে তাবাসসুমকে না জানানােয় চটে যান তিনি। এরপর তাঁক হলের কক্ষ (প্রজাপতি-২) দেখা করতে বলেন।
ফুলপরী খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা খুবই মনােযােগ দিয়ে, ধীরে ধীরে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। এ ছাড়া ৫ পষ্ঠার লিখিত দিয়েছি। আরও লিখিত দিতে বলা হয়েছে। আরার যখন ডাকবে তখন লিখিত জমা দিব।’
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ফুলপরী খাতুন এইচএসসি এবং শিবপুর আশরাফ আলী উচচ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন।
ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, ‘আমার ২ ছেলে ২ মেয়ে। এদের মধ্যে ৩ জনকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করাচ্ছি। বড় ছেলে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে মার্স্টাস পাশ করেছে। ছোট ছেলে ১০ম শ্রেণিতে পড়ে। কখনে এমর ঘটনার সম্মুখিন হয়নি। এখর আমার একটাই দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত, সুষ্ঠু বিচার। কঠিন বিচার করতে হবে। যাতে বাংলাদশ এ রকম কাজ আর কানা জায়গায় না ঘটে।’
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা