অনলাইন ডেস্ক :
মেহেদী হাসান মিরাজের খাটো লেংথের ডেলিভারি পুল করেই কাতরে উঠলেন তামিম ইকবাল। যন্ত্রণায় মুখ বিকৃত করে পিঠে হাত দিয়ে বসে পড়লেন উইকেটের পাশে। এরপর আর বেশিক্ষণ ব্যাটিং করলেন না অভিজ্ঞ ওপেনার। অস্বস্তি নিয়েই শেষ হলো তার প্রায় আধ ঘণ্টার নেট সেশন। ব্যাটিংয়ের আগে এই ব্যথার বাগড়া ছিল তার ফিল্ডিং সেশনেও। সেখানেও তার শরীরে ব্যথার থাবা দূর থেকেও বারবার বোঝা যাচ্ছিল শরীরী ভাষা দেখেই। অনেক দিন ধরেই পিঠের নিচের অংশের এই ব্যথাকে সঙ্গী করে খেলে যাচ্ছেন তামিম। মাঝেমধ্যে মাথাচাড়া দেয় তা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের আগে হানা দিয়েছে সেই পুরনো আততায়ী। টেস্ট শুরুর দুই দিন আগেও তাই এই টেস্টে তার খেলা অনিশ্চিত অনেকটাই। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার শুরু হয় বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন।
শুরুতে গা গরমের ফুটবল খেলার পর ফিল্ডিং অনুশীলন করেন ক্রিকেটাররা। গত কিছুদিন ধরেই অবশ্য অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুশীলন চলছে ক্রিকেটারদের। তবে জিম করার সময় এই ব্যথা ফিরে আসায় কয়েক দিন ধরে ব্যাটিং করছিলেন না তামিম। এ দিন তিনি ব্যাট হাতে নেন আবার। এর আগে ছিল ফিল্ডিং সেশন। কোমরের ব্যথার সতর্কতার কারণে এ দিন ফিল্ডিং অনুশীলন করার কথা ছিল না তামিমের। তবে দলে ট্রেনার নিক লির পরামর্শে ক্যাচিংয়ে নামেন তিনি। ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমটের ছোঁড়া একটি বল ধরতে গিয়ে আবার অনুভব করেন ব্যথা। তার অভিব্যক্তিতে তখন স্পষ্ট যন্ত্রণার ছাপ। দূর থেকে দেখে এগিয়ে আসেন ফিজিও মোজাদ্দেদ সানি। তবে তাকে কাছে আসতে দেননি ব্যথায় কাতর তামিম। হাতের ইশারায় সানিকে বোঝান, নিক লির সঙ্গে কথা বলার জন্য। কিছুক্ষণ পরই শেষ হয়ে যায় তামিমের মিনিট পাঁচেকের ফিল্ডিং সেশন। এরপর ড্রেসিং রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন তামিম। পরে চলে যান ইনডোরের বাইরের নেটে। সেখানে প্রায় আধ ঘণ্টার সেশনে বারবার ব্যথায় ভুগে পিঠে হাত দিতে দেখা যায় তাকে। নেটে শুরুতে তিনি ব্যাট করেন আর্ম থ্রোয়ারে। থ্রোয়ারদের নির্দেশনা দেন ফুল লেংথে করার জন্য। ওই ধরনের বলে ড্রাইভ খেলছিলেন স্বচ্ছন্দেই। হঠাৎ একটি খাটো লেংথের বল আসায় খানিক চমকে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ওই থ্রোয়ারকে বদলে ডেকে নেন আরেকজনকে।
পরে পেসারদের নেটে গিয়ে তাসকিন আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও এক নেট বোলারের বিপক্ষে খেলতে শুরু করেন ৩৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তাদের জন্যও ছিল ফুল লেংথে বল করার নির্দেশনা। কিছুটা লাফিয়ে ওঠা একটি ডেলিভারি ব্যাকফুট পাঞ্চ করতেই পিঠের ব্যথা অনুভব করেন তামিম। সবশেষে স্পিনারদের নেটে তাইজুল ইসলাম ও মিরাজকে ভালোভাবেই সামলাচ্ছিলেন তিনি। দুজনই টানা ফুল লেংথে বোলিং করছিলেন। হঠাৎই মিরাজের খাটো লেংথের ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। তীব্র ব্যথায় কুকড়ে ওঠেন তিনি। নেট থেকে বেরিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পিঠে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে যান ড্রেসিং রুমে। এমন অস্বস্তিকর ব্যাটিং সেশনের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে তামিমের টেস্ট খেলার সম্ভাবনা নিয়ে। বুধবার থেকে শুরু টেস্ট। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকলে সোমবার আরও একবার তিনি নেটে ব্যাটিং করবেন বলে জানা গেছে। এরপর চোটের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ। তামিমকে নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ার দিনে পুরো দমে অনুশীলন করেছেন দলের বাকি ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অনুশীলন সেশনের পর দুপুরে হোম অব ক্রিকেটে আসে আফগানিস্তান। একাডেমি মাঠে গা গরমের ফুটবলের পর স্কিল অনুশীলন করেন তারা।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা