অনলাইন ডেস্ক :
নীলফামারীতে অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার সকাল থেকে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডিমলা ডালিয়া পানি উন্নয়ন রোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র জানায়, সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার (৫২.৭৫) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২.৬০ সেন্টিমিটার। আবার বিকাল ৩টায় ওই পানি বেড়ে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবোর গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) মো. নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে পানি বাড়া-কমা করছে।’ সূত্র জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত একই লেভেলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ডিমলা, জলঢাকা এবং লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ডিমলা উপজেলার কিছামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশ পুকুর, ঝুনাগাছচাঁপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, ভেন্ডাবাড়ি, প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার মানুষজন গরু-ছাগল নিয়ে নিরাপদে সরে গেছেন। বন্যায় প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তার চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি কোমর থেকে হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। কারও বাড়িতে রান্না করে খাবার কোনও উপায় নেই। জরুরিভাবে শুকনো খাবার বিতরণ প্রয়োজন বলে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘উজানের পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ছাতুনামা কেল্লাবাড়ি, ভেন্ডাবাড়ি এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।’ পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, উজানের ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করায় এবার ভয়ঙ্কর বন্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন, ‘একদিকে ভারতের উজানের পানি, অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলার কিসামত ছাতনাই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।’ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এই পানি নেমে যাবে।’ ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় জানান, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের নজরে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি