নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর পশ্চিম রামপুরা থেকে গত শুক্রবার চুরির অভিযোগে সুমন শেখ ওরফে রোম্মানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। গ্রেফতারের পর রাখা হয় হাতিরঝিল থানার হাজতখানায়। সেই হাজতখানায় গত শনিবার ভোরে নিজের ট্রাউজার খুলে গ্রিলে পেঁচিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করে রোম্মান। এ সময় থানায় দায়িত্বে থাকা একজন এসআই ও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি অপমৃত্যুর মামলা। হাতিরঝিল থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম রামপুরা এলাকায় ওয়াটার পিউরিফায়িং ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রতিষ্ঠানে কাজ করা রোম্মান গত ১৩ আগস্ট রাতে ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে ঢোকে। সারারাত সেখানে অবস্থান করে ১৪ আগস্ট সকাল ৭টার পর বেরিয়ে যায়। অফিসে ঢোকে সময় তার পরনে ছিল রেইনকোট, মাথায় ছিল হেলমেট। অফিস রুমে ঢোকার পর প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির টাকার ভোল্টের দিকে যায়। পরে সেখান থেকে যায় ক্যাশিয়ারের রুমে। ক্যাশিয়ারের রুমে ড্রয়ার থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরি করে বেরিয়ে যায়। এ সময় সে রুমে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে ডিস্ট্রিবিউশন প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা হয়। এরপর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ৫৩ লাখ টাকা চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার পশ্চিম রামপুরা এলাকা থেকে রোম্মানকে গ্রেফতার করা হয়। বাদীর অভিযোগ এবং পুলিশি তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পরই গ্রেফতার করা হয় তাকে। এ সময় তার কাছ থেকে তিন লাখ বিশ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। হাতিরঝিল থানা-পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর চুরির টাকা উদ্ধারের জন্য গত শনিবার সকালের দিকে অভিযান পরিচালনার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই হাজতখানায় আত্মহত্যা করে রোম্মান। হাজতখানায় থাকার সময় বেশ কয়েকজন হাজতির কাছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। এ সময় সে বলেছিল, ‘টাকা যা নেওয়ার নিয়েছি। দরকার হলে আত্মহত্যা করবো, তবে কোনও টাকা দেবো না।’ আত্মহত্যার ঘটনার পর বেশ কয়েকজন হাজতির সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানতে পেরেছে পুলিশ। হাতিরঝিলের হাজতখানায় রোম্মানকে যে রুমে রাখা হয় সে রুমে রাত ১২টা পর্যন্ত আরও আসামি ছিল। ১২টার পর অন্যান্য আসামিকে অন্য রুমে রাখা হলে ওই রুমে রোম্মান একাই ছিলেন। ভোরের দিকে সে ‘আত্মহত্যা’ করে। গত শনিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সব ধরনের কার্যক্রম শেষে মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোম্মানের স্ত্রী জান্নাত বলেন, ‘আমার স্বামীকে তারা গ্রেফতার করেছে। শুনেছি থানা হেফাজতে আত্মহত্যা করেছে। তাহলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা কী করেছে? এই অবহেলার দায় কারা নেবে?’ তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামি হাজতখানায় আত্মহত্যা করেছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে হাতিরঝিল থানার দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক দরখাস্ত করা হয়েছে। ৩ সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম