April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, December 29th, 2022, 8:19 pm

দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয়

অনলাইন ডেস্ক :

চোটের কারণে বোলিংয়ে নেই ক্যামেরন গ্রিন। মিচেল স্টার্ককে বল করতে হচ্ছে আঙুলে চোট নিয়েই। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণে তাই ঘাটতি রয়ে গেল। তবে তাদের তাড়নায় তো কমতি নেই। সীমাবদ্ধতাকে সঙ্গী করেই গুঁড়িয়ে দিল তারা দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং। বিশাল জয়ে প্যাট কামিন্সের দল নিশ্চিত করে ফেলল সিরিজ জয়ও। মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়া জিতে গেল ইনিংস ও ১৮২ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাঠে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। মজার ব্যাপার হলো, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এর চেয়েও বড় ব্যবধানের জয় তাদের আছে চারটি, সবকটিই দক্ষিণ আফ্রিকায়! এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। দেশের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তাদের সবশেষ সিরিজ জয় ছিল সেই ২০০৫-০৬ মৌসুমে, যখন ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল রিকি পন্টিংয়ের দল। এরপর তিন দফার অস্ট্রেলিয়া সফরে সিরিজ জিতে ফিরছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এটিকে তার টানা চার করতে দিলেন না কামিন্সরা। ম্যাচের ভাগ্য আদতে নিশ্চিত হয়ে যায় আগেই। চতুর্থ দিনে দেখার ছিল, লড়াই কতটা করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও তারা লড়াই করতে পারেনি সেভাবে। অস্ট্রেলিয়ার সীমিত বোলিং আক্রমণের সামনেও এক টেম্বা বাভুমা ছাড়া দাঁড়াতে পারেননি কেউই। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সরল এরভিয়া ও টিয়ারিস ডে ব্রেইন অবশ্য দিনের শুরুতে একটু প্রতিরোধের ইঙ্গিত দেন। কয়েক দফায় ব্যাটের কানায় বল লাগলেও কোনোরকমে তারা কাটিয়ে দেন প্রায় এক ঘণ্টা। এরপরই চোটাক্রান্ত আঙুল নিয়ে মিচেল স্টার্কের আঘাত। তার ইয়র্কারে ২১ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে যান এরভিয়া। সিরিজের চার ইনিংসে প্রথমবার ২০ ছুঁতে পারলেন এই ওপেনার। এরপর ডে ব্রেইনের (২৮) উইকেট আসতেও সময় লাগেনি। স্কট বোল্যান্ডের বাড়তি লাফানো বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নেন স্টিভেন স্মিথ। টেস্ট ক্রিকটে দেড়শ ক্যাচ পূর্ণ হয় তার। অস্ট্রেলিয়ার নন-কিপারদের মধ্যে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন আগে কেবল রিকি পন্টিং, মার্ক ওয়াহ, অ্যালান বোর্ডার ও মার্ক টেইলর। লাঞ্চের আগে আরও একটি উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট খায়া জন্ডো। এরপর বাভুমা ও কাইল ভেরেইনা মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। ইনিংসের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি গড়েন তারা। লাঞ্চের পরপরই ৩৩ রানে ভেরেইনাকে ফিরিয়ে এই জুটি ৬৩ রানে থামান বোল্যান্ড। এরপর কেবল শেষের অপেক্ষা। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা মার্কো ইয়ানসেনকে এবার ৫ রানে বিদায় করেন লায়ন। লড়িয়ে ইনিংস খেলা বাভুমার শেষটা হয় হতাশায়। লায়নকে স্লগ সুইপ খেলে উইকেট উপহার দেন তিনি ১৪৪ বলে ৬৫ রান করে। শেষ ব্যাটসম্যান লুঙ্গি এনগিডি ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ রান করে দলকে ২০০ পার করান। টানা সাত ইনিংস পর দক্ষিণ আফ্রিকা ছুঁতে পারল দুইশ! এনগিডিকে বোল্ড করেই ম্যাচ শেষ করে দেন স্টিভেন স্মিথ। লেগ স্পিন কিংবদন্তি প্রয়াত শেষ ওয়ার্নের স্মরণে নানা আয়োজনের টেস্ট ম্যাচের শেষটা হলো লেগ স্পিন দিয়েই। ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ানরা মাঠ ছাড়েন সবার সামনে ওয়ার্নারকে রেখে। বাজে ফর্মের কারণে শততম টেস্ট ম্যাচটিতে এই ওপেনার মাঠে নেমেছিলেন ক্যারিয়ার শেষের ঝুঁকিকে সঙ্গী করে। কিন্তু প্রবল চাপের মধ্যেও উপলক্ষ রাঙান তিনি দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে। নিশ্চিত করেন ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করাও। ম্যাচের সেরাও তিনিই। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়া এই ম্যাচ জিতে ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করেই ফেলল। দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে হলে জিততেই হবে পরের টেস্টে। সিডনিতে সেই টেস্ট শুরু আগামী বুধবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৮৯।
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৪৫ ওভারে ৫৭৫/৮ (ডি.)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৬৮.৫ ওভারে ২০৪ (আগের দিন ১৫/১) (এরভিয়া ২১, এলগার ০, ডে ব্রেইন ২৮, বাভুমা ৬৫, জন্ডো ১, ভেরেইনা ৩৩, ইয়ানসেন ৫, মহারাজ ১৩, রাবাদা ৩, নরকিয়া ৮*, এনগিডি ২১; স্টার্ক ১৮-৪-৬২-১, কামিন্স ১৬-৮-২০-১, বোল্যান্ড ১৫-২-৪৯-২, লায়ন ১৭-১-৫৮-৩, স্মিথ ২.৫-০-৯-১)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ১৮২ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার।