অনলাইন ডেস্ক :
এলচের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পথ হারাতে বসেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। ১০ জনের দলে নেমে আসার পরপরই তারা হজম করল গোল। আরও একবার আগেভাগে কোপা দেল রে থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কা। সমতা টেনে আশা জাগালেন ইসকো। আর শেষ দিকে দারুণ নৈপুণ্যে দলকে কোয়ার্টার-ফাইনালে তুললেন এদেন আজার। প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল। গনসালো ভের্দুর গোলে শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল এলচে। পরে দুই বদলি খেলোয়াড়ের নৈপুণ্যে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে করিম বেনজেমা-কোর্তোয়াদের ছাড়া খেলতে নামা রিয়াল। গত অক্টোবরে এবারের লা লিগায় প্রথম দেখায় এলচের মাঠে একই ব্যবধানে জিতেছিল রিয়াল। ম্যাচের শুরুটা দারুণ হতে পারত এলচের। দশম মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলের সুযোগে লুকাস পেরেস বল বাড়ান গোলমুখে। সামনে ফাঁকা জাল, কিন্তু পোস্টে মেরে বসেন গিদো কারিয়ো। ২৬তম মিনিটে তার হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকান রিয়ালের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। প্রথমার্ধের শেষ ১৫ মিনিটে চাপ ধরে রেখে ভালো কয়েকটি আক্রমণ করে রিয়াল। কিন্তু প্রতিবারই শেষে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছিল তারা। ৪০তম মিনিটে ডি-বক্সের মুখে ফাঁকায় বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। দুই মিনিট পর বাঁদিকে দারুণভাবে একজনকে কাটিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে কাটব্যাক করেন মার্সেলো। ওখানে ভিনিসিউস জুনিয়রের শট লক্ষ্যে থাকেনি, পোস্টের কাছে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি লুকাস ভাসকেস। বিরতির পর কেউই পারছিল না উল্লেখযোগ্য কিছু করতে। নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে আসছিল। গোল পেতে মরিয়া রিয়াল ৭২তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনে। ফেদে ভালভেরদেকে তুলে লুকা মদ্রিচ ও কামাভিঙ্গার বদলে কাসেমিরোকে নামায় তারা। মাঠে নামার পাঁচ মিনিট পরই দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করেন কাসেমিরো। তবে দূর থেকে নেওয়া তার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান এলচে গোলরক্ষক। খানিক পর ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন ভিনিসিউস। অতিরিক্ত সময়ের ১০২তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় রিয়াল। নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে বিপজ্জনক সীমানায় প্রতিপক্ষের তেতে মরেন্তেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মার্সেলো। ওই ফ্রি কিকেই এগিয়ে যায় এলচে। গনসালো ভের্দুর প্রথম শট রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়। ফিরতি বল পেয়ে আবার শট নেন তিনি। সামনে কাসেমিরোর পায়ে লেগে দিক পাল্টে বল জালে জড়ায়, কিছুই করার ছিল না লুনিনের। তিন বদলি খেলোয়াড়ের নৈপুণ্যে পাঁচ মিনিট পরই অবশ্য সমতায় ফেরে রিয়াল। বাঁ দিক থেকে ডি-বক্সের মাঝ বরাবর পাস দেন কাসেমিরো, শট নেন দানি সেবাইয়োস। বলের দিকে চোখ রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন গোলরক্ষক, সামনে দাঁড়ানো ইসকো ফ্লিকে বলের দিক পাল্টে দেন। আর ১১৫তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন আজার। দাভিদ আলাবার দারুণ পাস পেয়ে বিনা বাধায় বাঁ দিক দিয়ে আজার ডি-বক্সে ঢুকে পড়তে যাচ্ছিলেন। বিপদ বুঝে দ্রুত এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক; কিন্তু ওখানেই ভুলটা করে বসেন তিনি। তাকে কাটিয়ে দূর থেকে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বেলজিয়াম ফরোয়ার্ড। রিয়ালে আসার পর থেকে চোট ও ফর্মহীনতায় ভুগে খেলার সুযোগই তেমন পান না আজার। অতি প্রয়োজনের মুহূর্তে দলকে জিতিয়ে একাদশের দাবিটা ভালোমতোই জানিয়ে রাখলেন তিনি। ম্যাচের একেবারে শেষ সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এলচের ফরোয়ার্ড পেরে মিয়া। স্প্যানিশ কাপ নামে পরিচিত স্পেনের দ্বিতীয় সেরা এই প্রতিযোগিতায় তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল। কিন্তু সবশেষ শিরোপা জয়ের পর কেটে গেছে সাত বছর। গত আসরে তো তারা বিদায় নিয়েছিল শেষ বত্রিশে। তার আগেরবার কোয়ার্টার-ফাইনালে। শঙ্কা কাটিয়ে এবারও তারা উঠল শেষ আটে।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা