অনলাইন ডেস্ক :
‘সকল দেশে সকল কালে উৎসাহ-তেজ অচঞ্চল, ওই আমাদের আশার প্রদীপ, ওই আমাদের ছেলের দল।’ ১৯৭১ সালে এমনই এক দস্যি ছেলের দল শত্রুর কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছিল লাল-সবুজের পতাকা। তবে শুধু কি অস্ত্র দিয়েই? নাহ্ সকল যুদ্ধের সূচনা কেবল যুদ্ধের ময়দানে হয়নি, কিছু খেলার মাঠেও হয়েছে। এমনই এক গল্প নিয়ে আসছেন নির্মাতা রায়হান রাফি। ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘দামাল’-এর ট্রেলার। ২৮ অক্টোবর থেকে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ওপর গল্প লিখেছেন লেখক ফরিদুর রেজা সাগর। তা নিয়েই নির্মিত হয়েছে দামাল। বলা হচ্ছে, ’৭১-এ ফুটবল খেলে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ একাট্টা করা হয়েছিল, যা অনেকেই জানেন না। ইতিহাসের এই অজানা অধ্যায় উঠে আসবে সিনেমায়। যদিও নির্মাতার দাবি, এটি কোনো সত্যি ঘটনা নিয়ে নির্মিত সিনেমা নয়, এটি স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম থেকে উৎসাহিত একটি গল্প। ট্রেলারের শুরুতেই আকর্ষণ কেড়েছে অসাধারণ ভয়েজ ওভার। বাংলা সিনেমায় বেশকিছু দিন ধরে এত ভালো, শিহরন জাগানো ভয়েজ ওভার শোনাই যায় না। সাধুবাদ জানাই ইন্তেখাব দিনারকে। এরপর জোশ জাগানো এক আবহসংগীতে স্ক্রিনে আসেন সিয়াম আহমেদ ও শরিফুল রাজ। প্রথম লুকেই বাজিমাত। অসাধারণ হ্যান্ডসাম লেগেছে দুই নায়ককেই। এবং শোনা গেছে শুধু দর্শনে নয়, গুণেও নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন এই দুই অভিনেতা, ৭ মাস ট্রেনিং নিয়েছেন ফুটবলের। এরপরই ট্রেনের দুই বগির নিচ থেকে একটা শট দেখানো হয়, বল হাতে লাফ দিয়ে যায় রাজ। এই শট সবচেয়ে ভালো লেগেছে। রাজের আরও একটি ফুটবল শট দেখানো হয় গাছের গাঁ বেয়ে গিয়ে কিক মারেন বলে, এবং সেটিই আবার প্যারালালভাবে মাঠেও দেখানো হয়। ফুটবলের ভাষায় এই শটের নাম বাইসাইকেল শট। দুর্দান্ত! এই দুই শটেই পুরা সিনেমার সিনোম্যাটোগ্রাফি এবং রাজের পারদর্শিতা নিয়ে আশা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ফুটবল টিমের জার্সি নিয়ে একটা অসংগতির কথা বলা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। দেখা যায় সিয়াম-রাজদের ফুটবল দলের সদস্যদের গায়ের জার্সির নম্বর বাংলায়, কিন্তু তাদের দলেরই গোলকিপার সুমিতের জার্সির নম্বর ইংরেজিতে। অসামঞ্জস্যটা এখানে। তবে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, এটি চিত্রনাট্যের অংশ। এর এক্সপ্লেনেশন মিলবে সিনেমা হলে। স্ক্রিনে আসেন বিদ্যা সিনহা মিম। ইমোশনাল ড্রামাটিক সিনে কান্না চোখে এক দৃষ্টিতে তার তাকিয়ে থাকা হৃদয়ে নাড়া দেয়। সিনেমায় মিম ডাক্তার, সে অনুযায়ী তার লুক সেট ভালোই লেগেছে, আশা করছি সিনেমায় তার অতিরঞ্জিত মেকআপ দেখে বিরক্ত হব না আমরা। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, মিম আরও একটি মেমরেবল পারফরম্যান্স দেবেন আর তা লাস্ট শটে তার অ্যাগ্রিসিভনেস দেখেই বোঝা গেছে। সিয়ামকে নিয়েও আমরা এবার আশাবাদী। কারণ, রায়হান রাফি বিগত বছরগুলোতে আমাদের যে সিয়ামকে চিনিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে আশাজাগানিয়া এক সিয়াম। আশা করছি, এ সিনেমায়ও তার ব্যতিক্রম হবে না। ট্রেলারজুড়ে দেখানো হয় একদিকে যুদ্ধ একদিকে খেলার মাঠ। যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর থাবায় তছনছ হতে থাকে সবার জীবন, তখনই একদল সাহসী তরুণের কণ্ঠে শোনা যায় জয় বাংলা। তবে এটা শুধু যুদ্ধের গল্পই নয়, মানুষের জীবনের ভালোবাসা, সম্পর্ক, আবেগ সবকিছুই উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেদিক দিয়ে পুরোদস্তুর পিরিওডিক্যাল কমার্শিয়াল সিনেমা বলা যেতেই পারে ‘দামাল’-কে। যদিও রায়হান রাফির সিনেমা নিয়ে কিছু প্রেডিক্ট করা মুশকিল। তিনি টুইস্টে মুনশি। দেখা যাক, এ সিনেমায় কী অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র আমাদের দরকার আরও বেশি। ছোট ছোট কিন্তু এমন সিগনিফিকেন্ট গল্প আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জানার জন্য সেলুলয়েডে থেকে যাওয়া প্রয়োজন। সে জায়গা থেকে এত বিগ স্টার কাস্টের, বিগ স্কেলের সিনেমা নির্মাণের প্রয়াসই প্রত্যাশা ও সন্তুষ্টি বাড়ায়।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা