অনলাইন ডেস্ক :
রাস্তার দুই ধারে নানা রঙের বোর্ড। তাতে শোভা পাচ্ছে জিকো-তপু-রবিনিয়োদের ছবি। ‘বর্ন টু বিট’ শ্লোগানও লেখা বোর্ডগুলোতে। নিজেদের আঙিনায় এভাবেই সবাইকে স্বাগত জানাল বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই লেখা হয়ে গেল নতুন ইতিহাস, দেশের ফুটবলে প্রথম দল হিসেবে নিজেদের মাঠে খেলার কীর্তি গড়ল দলটি। ইতিহাস গড়া ম্যাচটি দারুণ জয়ে রাঙিয়ে রাখল অস্কার ব্রুসনের দল। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বুধবার পুলিশ এফসিকে ৩-০ গোলে হারায় কিংস। জোড়া গোল উপহার দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো। অন্য গোলটি নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এলিটা কিংসলের। স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে হেরে লিগ শুরুর পর টানা তিন জয় পেল কিংস। হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের মিশনে থাকা দলটির চার ম্যাচে পয়েন্ট ৯। প্রথমার্ধে পুলিশের জমাট রক্ষণের সামনে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে কিংসের আক্রমণভাগ। প্রথম ভালো আক্রমণটিও করে পুলিশ। দ্বাদশ মিনিটে আফগান ফরোয়ার্ড আমিরউদ্দিন শরিফিকে বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির দাবি তোলে তারা। কিন্তু রেফারির সাড়া মেলেনি। পঞ্চদশ মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ক্রসে তৌহিদুল আলম সবুজ বলের নাগাল পাওয়ার আগে জয়ন্ত ক্লিয়ার করেন। দানিলো অগাস্তো-জয়ন্তের জমাট রক্ষণে প্রথমার্ধে দুবারই চিড় ধরাতে পারে কিংস, কিন্তু এ সময় গোল মেলেনি। ৩৪তম মিনিটে মাশুক মিয়া জনির বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট গোলকিপার মোহাম্মদ নেহাল তালুবন্দী করেন। ৩৯তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রবিনিয়ো তিন জনকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন, বল ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সুমন রেজাকে তুলে এলিটা কিংসলে এবং সবুজের জায়গায় মাহাদী ইউসুফ খানকে নামান ব্রুসন। তাতে কিংসের খেলায় গতিও বাড়ে। পুলিশের রক্ষণও নড়বড়ে হতে থাকে একটু একটু করে। ৬৬তম মিনিটে গোলের উচ্ছ্বাসে নেচে ওঠে কিংসের গ্যালারি। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা মাহাদী বাইলাইনের একটু উপরে বল হারান ইসা ফয়সালের কাছে। দ্রুতই তা পূনরুদ্ধার করে বক্সে কাটব্যাক করেন রবিনিয়োর উদ্দেশে। নিখুঁত কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৭৫তম মিনিটে সতীর্থের ব্যাকপাস নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি দানিলো অগাস্তো। একই সময়ে বক্সে ছুটে যান মাহাদীও। বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লড়াইয়ে অগাস্তোর হালকা স্পর্শে পড়ে যান তিনি; পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি আনিসুর রহমান সাগর। পুলিশের খেলোয়াড়রা সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানাতে থাকেন, কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন রেফারি। বলের লাইনে ঝাঁপিয়েও রবিনিয়োর স্পট কিক আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল। শেষ দিকে প্রতি-আক্রমণে পুলিশ এফসির কফিনে তৃতীয় পেরেকটি ঠুকে দেয় কিংস। এবারও গোলের নেপথ্যের কারিগর মাহাদী। ২৫ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে নেহালকে পরাস্ত করেন কিংসলে। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে বাঁ দিক থেকে ইয়াসিন আরাফাতের আড়াআড়ি পাসে গোলমুখ থেকে টোকা দেন কিংসলে। তা আটকে ব্যবধান বাড়তে দেননি নেহাল। চার ম্যাচে এ নিয়ে দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ পেল পুলিশ এফসি। দলটির হতাশা আরও বাড়ে এহসানুর রহমান লাল কার্ড দেখায়। ৬২তম মিনিট পর্যন্ত খেলার পর এই ডিফেন্ডারকে তুলে নিয়েছিলেন পুলিশ এফসি কোচ। কিন্তু বেঞ্চে বসে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা