অনলাইন ডেস্ক :
প্রতারণার মাধ্যমে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা উপার্জনের অভিযোগে দিনাজপুরের আলোচিত সাবেক যুবলীগ নেতা খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় মামলাটি করেন দিনাজপুর সিআইডির উপ-পুলিশ পরিদর্শক রোকনুজ্জামান। মামলায় মানি লন্ডারিং করা অর্থের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৫ টাকা বলা হয়েছে। অভিযুক্ত খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও খানসামা উপজেলার পূর্ববাসুলী গ্রামের হাবিবুল্লাহ আজাদের ছেলে। এই মামলায় তার মা রাহিমা খানমসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় বাদী বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৯ অনুযায়ী অনুসন্ধানের সময় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পক্ষ থেকে দেওয়া ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্য ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণ এবং সরেজমিনে অনুসন্ধান করে মামলা করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ দিনাজপুর শাখায় ১২টি হিসাব নম্বর; মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড রংপুর শাখায় মারিয়া ডেইরিং অ্যান্ড ফেটানিং সেন্টারের নামে একটি, মেসার্স সর্দার হাসকিং মিলের নামে রুপালী ব্যাংক চেহেলগাজী শাখায় একটি, সোনালী ব্যাংক লিলির মোড় শাখায় একটি, সোনালী ব্যাংক খানসামা শাখায় একটি এবং মেসার্স ডিজিটাল কনস্ট্রাকশন নামে সোনালী ব্যাংক দিনাজপুর শাখায় একটি হিসাব খোলা রয়েছে। এই হিসাবগুলোতে ২০১৩ সালের জুন মাস থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ ২৯ হাজার ৮১১ টাকা জমা হয়। তার মা রহিমা খানমের নামে সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের দিনাজপুর শাখার একটি হিসাব নম্বরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৫৯ লাখ সাত হাজার ৭৭৪ টাকা জমা হয়। ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে উল্লেখযোগ্য ও অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। তারা বিভিন্ন সময়ে বাড়ি, জমিজমা নিজ নামে-বেনামে কিনে এবং আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডের দিনাজপুর শাখার ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, মিল্টন ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে বেশ কয়েকটি এফডিআর, ডিপিএস, সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে। তবে সেগুলো ব্যাংকের নিয়ম মোতাবেকই হয়েছে। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন ওরফে খায়রুল আজাদ মিল্টন একজন প্রতারক, টেন্ডারবাজ, বালুমহল ও জলমহল দখলকারী, ভূমিখেকো, সুধের ব্যবসায়ী এবং সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মূল হোতা। মামলার বাদী রোকনুজ্জামান আরও বলেন, ছায়া তদন্ত করেই মামলা দায়ের করেছি। এখন এখানে আমার আর কোনও কার্যক্রম নেই। নতুন করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হবে। সিআইডি সদর দপ্তর চাইলে তারাও তদন্ত করতে পারে। প্রাথমিক সত্যতার বিষয়গুলো এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখ্য, মিল্টনের বিরুদ্ধে বালুমহল ইজারা নিয়ে দেওয়ার নাম করে অর্থ আদায়, সরকার কর্মচারীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সরকারি কাজে বাধা এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি