March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 28th, 2022, 7:37 pm

‘দিন দ্য ডে’ নির্মাতার চুক্তিপত্র ‘বানোয়াট’: অনন্ত জলিল

অনলাইন ডেস্ক :

‘দিন দ্য ডে’ সিনেমা করতে গিয়ে যে চুক্তি ছিলো, সেটা ভেঙেছেন অনন্ত জলিল- এমন অভিযোগ তুলে সম্প্রতি ‘মামলার হুমকি’ দিয়েছিলেন ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম। এ নিয়ে কয়েক দফায় যুক্তি খ-ন করে পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন প্রযোজক ও চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। এরপর ‘মূল চুক্তিপত্র’ এবং ‘মূল পরিকল্পিত বাজেট’ নিজের ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করেন ইরানি নির্মাতা। যেখানে চুক্তিপত্র অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ‘দিন দ্য ডে’র সর্বমোট বাজেট ধরা হয় ৫ লাখ ইউএস ডলার। যা বর্তমান বাজারমূল্যে বাংলাদেশি টাকায় পৌনে ৫ কোটির মতো!
বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন অনন্ত জলিল। ৪/৫ কোটি বাজেটের সিনেমাকে কেন ১০০ কোটি টাকায় নির্মিত বলে প্রচার করলেন, এ নিয়ে কটাক্ষের শিকারও হন অনন্ত। ‘দিন দ্য ডে’র বাজেট সহ ইরানি নির্মাতার বেশকিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনন্ত জলিল নিজের মতো করে উত্তর দিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে।
প্রিয় বন্ধুগণ, কিছুদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়াতে ‘দিন-দ্য ডে’র বাজেট নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। মিস্টার মুর্তজা অতাশ জমজম, ইরানি ডিরেক্টর এবং প্রডিউসার, ‘দিন-দ্য ডে’ মুভির।
তিনি বাংলায় একটি এগ্রিমেন্ট পোস্ট করেন যাতে দেখানো হয়েছে, আমার তাকে ৪-৫ লাখ ডলার দেওয়ার কথা, তা থেকে আপনারা নিউজ করে যাচ্ছেন মুভিটির বাজেট ৪ কোটি টাকা। বাংলায় এগ্রিমেন্ট পোস্ট করার কিছুদিন আগে তার ইনস্টাগ্রামে আরো একটি লেখা পোস্ট করেন সেখানে তিনি বলেন, আমি তার এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী পেমেন্ট করি নাই এবং ইরানিদেরকে আমি পেমেন্ট করি নাই। এমনকি তিনি বলেছেন, মুভিটি আমি আমার মত করে বানিয়েছি। আমি এক এক করে তার এই পোস্টের ব্যাপারে আসল সত্যটা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১) এটা যৌথ প্রযোজনার মুভি, দুটি দেশের মধ্যে সুতরাং বাংলা কোন এগ্রিমেন্ট গ্রহণযোগ্য হয় কিনা তা আপনাদের সবার ই জানা। যারা খুব উৎসাহ নিয়ে আমার সমালোচনা করছেন মিস্টার মুর্তজার সাথে কাঁধ মিলিয়ে তাদেরই কেউ না কেউই এই কাজটি করেছেন, যা আমি হলফ করে বলতে পারি। এই এগ্রিমেন্ট সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট।
২) এবার আসি আমার মন গড়া ভাবে মুভিটি বানানোর ব্যাপারে। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, বাংলাদেশে শুটিং এর সময়ও ইরান থেকে ১৭ জনের একটি টিম নিয়ে আসেন মিস্টার মুর্তজা।
আপনারা মিশা ভাই ও খোরশেদ আলম ভাইকে সবাই চিনেন, তাদেরকে একবার ফোন করে জিজ্ঞেস করবেন, মিশা ভাই সহ অন্যান্য বাংলাদেশী আর্টিস ছিলেন, শুটিং এ একবারও আমি কোন ডিরেকশান দিয়েছি কিনা?
কারণ মিস্টার মুর্তজা সাহেবের সাথে আমাদের দেশের একজন গুণী ডিরেক্টর ছিলেন তার নাম মিস্টার শেখ জামাল। তিনিও এই ইন্ডাস্ট্রিতে ৩৫ বছর ধরে কাজ করেন। তারা একত্রে মিলে মিস্টার মুর্তজা ও শেখ জামাল বাংলাদেশের শুটিংটি পরিচালনা করেন।
৩) আপনারা মুভিটি দেখেছেন, কিছু অংশ বাংলাদেশ ছাড়া মুভিটির বড় অংশগুলো ৩টি দেশ মিলে শুটিং হয়েছে। সে দেশের আর্টিস, টেকনিশিয়াশন সহ সমস্ত কিছু মিস্টার মুর্তজা এ্যারেঞ্জ করেছেন এবং শুটিং সম্পূর্ণ করেছেন। সাথে আমাদের বাংলাদেশের কিছু টেকনিশিয়ান কাজ করেন। আমাদের টেকনিশিয়ানরাও তাদের সাথে পারফেক্ট ভাবে কাজ করতে পারেনি কারণ তাদের এক একজনের এক এক ভাষা। অথচ তিনি খুব সুন্দরভাবে একটি স্ট্যাটাস দিলেন যে, আমি মুভিটি আমার মত করে বানিয়েছি, এই কথাটা যে কতটা সত্য, কতটা যৌক্তিক তা যাচাই করার সময়ও আপনাদের নেই। ব্যাস, শুরু হয়ে গেলে আপনাদের সমালোচনা করা।
৪) এবার আসি মুভিটির বাজেট নিয়ে। মুভিটির শুটিং শুরু হয় ২০১৯ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালের মধ্যে। আপনারা আমার ইন্টারভিউগুলো দেখতে পারেন, টেলিভিশন, নিউজ পেপার, সোস্যাল মিডিয়াতে মুভিটির রিলিজ এর আগ মুর্হুত পর্যন্ত এবং রিলিজের পরেও একটি ইন্টারভিউতে দেখাতে পারবেন? যে আমি বলেছি এই মুভিটির ইনভেস্টর আমি, আমি সব সময় বলে এসেছি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের শুটিং এর ইনভেস্টর আমি। ২০২১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি লা-মেরিডিয়ান হোটেলে ‘দিন-দ্য ডে’ এবং “নেত্রী দ্য লিডার” মুভির একটি অনুষ্ঠান করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মুর্তজা, ইরানের আর্টিসগণ উপস্থিত ছিলেন। মুর্তজা প্রেস কনফারেন্স এর সময় আমাকে বলেন শুটিংয়ে তিনি যে বাজেট নির্ধারণ করেছিলেন তার চেয়ে তিনি অনেক বেশি অর্থ শুটিং এ খরচ করেন। মিস্টার মুর্তজার বলা এমাউন্টটায় প্রেস কনফারেন্স এ আমি বলি এবং আমার ইন্টারভিউ গুলোতেও সেম একই কথা বলি, তিনি যে মুভির বাজেটের কথা বলেছিলেন। মিস্টার মুর্তজা তুলে ধরেছেন, আমার ৪-৫ লক্ষ ডলার তাকে শুটিং খরচের জন্য দেওয়ার কথা। এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা দেই নাই। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এসপার এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমার দেওয়ার কথা, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমি বহন করি। সেখানে ১ কোটি টাকা লাগলো, বা ৪ কোটি টাকা লাগলো সেটা তো মিস্টার মুর্তজার দেখার বিষয় না। বালাদেশের শুটিং খরচ ছাড়া বিদেশের কোন শুটিং খরচ ই আমার দেওয়ার কথা না, আমাদের ট্রাভেলিং কষ্ট ছাড়া, মিনস ইয়ার টিকিট ছাড়া। সেখানে আমি তাকে ডলার দিবো এই প্রশ্ন উঠবেই বা কেন?
তাহলে মিস্টার মুর্তজা এতগুলো দেশে যে শুটিং করলো তাতে তো তার কোন টাকা ই খরচ হয় নাই। তিনি যে এমাউন্ট বলেছেন আমার দেওয়ার কথা সেটাই আপনারা মুভির বাজেট বলে নিউজ করেছেন। তাহলে তিনি কীভাবে বলেন তার পোস্টে যে আমি তাকে এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী টাকা দেই নাই। আর আপনারা তা ফলোও করে প্রচার করছেন মুভিটির বাজেট ৪ কোটি টাকা। তাহলে তো মিস্টার মুর্তজার শুটিং এ কোন টাকাই খরচ করেন নাই।
আমরা যখন বিদেশে শুটিং এ যাই, মুর্তজা আমাদেরকে অনেক সম্মান দিয়েছেন, ফাইভ স্টার হোটেল এ রেখেছেন, এমনকি তার বাসায়ও দুইদিন আমাদের ফুলটিমকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমি ঠিক একই রকম ভাবে ইরানের ১৭ জনের টিমকে সোনারগাঁও হোটেল এ রাখি ১৮ দিন এবং অনুরুপ সম্মান আমরাও দিয়েছি তাদের ফুলটিমকে। মুর্তজার সাথে আমার কখনো কোন মদভেদাভেদ বা খারাপ সর্ম্পক হয় নাই। কে বা কারা নিজের স্বার্থের জন্য মুর্তজার সাথে আমার এই দ্বন্দের সৃষ্টি করেছেন যেটা তারাই ভালো জানে এবং মুর্তজাই বলতে পারবেন।
মুভি রিলিজের আগ পর্যন্ত আমার ও মুর্তজার সাথে কখনোই কোন খারাপ সর্ম্পক ছিল না আমি আশা করি আগামীতেও থাকবে না। যাদের স্বার্থের জন্য এই ষড়যন্ত্র করেছেন তাদের মুখোশ একদিন ঠিকই মিস্টার মুর্তজাই প্রকাশ করবেন বলে আমার আত্মবিশ্বাস।