নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) চতুর্থ দিন ছিল সোমবার (২৬ জুলাই) বিধিনিষেধে রিকশা ছাড়া সব ধরনের যন্ত্রচালিত গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। খোলেনি মার্কেট ও দোকানপাট। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
তবুও গত তিনদিনের তুলনায় যেমন বেড়েছে মানুষের চলাচল, তেমনই বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। চেকপোস্টে রিকশা-যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় কোথাও কোথাও কিছুটা যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে, রাজধানীর অনেক বেসরকারি অফিস খোলা থাকায় বাধ্য হয়ে তারা বের হয়েছেন কর্মীরা। রিকশা, ভ্যান কিংবা ব্যক্তিগত প্রাইভেট গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন তারা। অনেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে ভোগান্তি নিয়ে যাচ্ছেন কর্মস্থলে। সোমবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শাহবাগ, বাংলামোটর, পান্থপথ, কাওরান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, গুলশান, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, মতিঝিল, গুলিস্তান এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, প্রায় সবগুলো সড়কেই আগের তিনদিনের তুলনায় ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে কয়েকগুণ।
চেকপোস্টগুলোতে প্রথম তিনদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে তৎপরতা ছিল সেটা সোমবার (২৬ জুলাই) তেমন দেখা যায়নি। বেশিরভাগ গাড়ি তল্লাশি না করে চেকপোস্ট থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। পুলিশের তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। কিছুকিছু চেকপোস্টে অপ্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গাড়ির নামে মামলা হয়েছে, গুনতে হয়েছে জরিমানা। বাংলামোটর মোড়ে আফজাল উদ্দীন নামে এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তায় এখন মানুষ বেশি, কিন্তু পরিবহন নেই। তাই সংসার চালাতে বাইক নিয়ে বের হওয়া। অন্যদিন পুলিশের চেকিংয়ের ভয় থাকলেও সোমবার (২৬ জুলাই) সেরকম কড়াকড়ির মধ্যে পড়তে হয়নি। কারওয়ান বাজারে রিকশাচালক আক্তার হোসেন বলেন, অন্যদিনের তুলনায় এখন লোকজন একটু বেশি বাইরে চলাচল করতে শুরু করেছেন। তবে এখনো অনেকেই জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। কারওয়ান বাজারের একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতেই আসছেন ক্রেতারা। অন্যদিনের চেয়ে একটু একটু করে ক্রেতা সমাগম বাড়ছে। সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানম-ি, জিগাতলা, রাসেল স্কয়ার এলাকা ঘুরে তল্লাশি চৌকিগুলোতে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। গত তিনদিনের তুলনায় এসব তল্লাশি চৌকিতে গাড়ির জটলা বেশি ছিল। ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেলের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসবের বেশিরভাগই ছিল বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কর্মীদের। গত তিনদিনের তুলনায় রিকশাভাড়া কিছুটা কমলেও এখনো অন্তত দিগুণ ভাড়া হাঁকছেন চালকরা। মিরপুর মোড় থেকে ঝিগাতলায় কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন ব্যাংককর্মী অরন্য আবির মাহমুদ। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময় ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় যাওয়া গেলেও এখন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। রাস্তায় রিকশা থাকলেও সবাই অতিরিক্ত ভাড়া চায়।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম