November 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, November 7th, 2023, 8:55 pm

দিল্লির দূষণ রোধে ভারতের সুপ্রিমকোর্টের চরম হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক :

ভারতের দিল্লির দূষণ নিয়ে ‘রাজনৈতিক লড়াই চলতে পারে না, মানুষের স্বাস্থ্যকে খুন করা হচ্ছে।’ দিল্লির দূষণ প্রসঙ্গে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। গত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লির বাতাসের গুণগত মান ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমন অবস্থায় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোতে শস্যের গোড়া পোড়ানো নিয়েও চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) জনস্বার্থে এক মামলায় শস্যের গোড়া পোড়ানোর বিষয়টি শুনানিতে তোলেন দূষণ নিয়ে মামলাকারীর আইনজীবী অপরাজিতা সিং।

তিনি জানান, মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও পাঞ্জাবে এখনও শস্যের গোড়া পোড়ানো চলছে। দিল্লির আজকের অবস্থার জন্য শস্যের গোড়া পোড়ানোই দায়ী। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোতে শস্যের গোড়া পোড়ানো নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। রাজধানীতে সাম্প্রতিক ধোঁয়া দেখার পর এই বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই। গোপাল রাইয়ের দাবি, শুধু দিল্লি নয়, গোটা উত্তর ভারত দূষণের সমস্যায় ভুগছে। এ দূষণের জন্য ৬৯ শতাংশ দায়ী প্রতিবেশী রাজ্যগুলো। দিল্লির দূষণের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গোপাল। এরপরই শস্যের গোড়া পোড়ানো নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই বাদ দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি এসকে কাউল এবং সুধাংশু ধুলিয়া।

শীর্ষ আদালত এদিন পাঞ্জাব সরকারকে জানায়, শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। কীভাবে করবেন জানি না। এটা আপনাদের দায়িত্ব। কিন্তু এটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। অবিলম্বে পদক্ষেপ প্রয়োজন। দিল্লি সরকারের সমালোচনা করে দেশটির শীর্ষ আদালত জানায়, দূষণের জন্য দিল্লি সরকারও দায়ী। রাজপথে চলা বহু বাসও দূষণের কারণ। আপনাদের এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রসঙ্গত, দিওয়ালির আগেই গত এক সপ্তাহের মধ্যে ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে ভারতের রাজধানী দিল্লির দূষণ।

শনিবার দিল্লির বাতাসের গড় গুণগত মান ছিল ৪১৫। রোববার সকাল ৭টা নাগাদ দিল্লির বাতাসের গুণগত মান ছিল ৪৬০। বর্তমানে রাজধানীতে শ্বাসগ্রহণে শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা ২৫-৩০টি সিগারেট পানের সমান। এই পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ¦ালার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। বিশেষত অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও প্রবীণরা।

এ অবস্থায় শিশুদের সুরক্ষায় আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর সব প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দিল্লির সরকার। দূষণ সংক্রান্ত নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে ৫২টি দল গঠন করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ত দপ্তর ৬০টি ধোঁয়া প্রতিরোধী কামান ব্যবহার করছে। রোববার দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই জানান, দূষণ পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে রাজধানীতে নির্মাণ কাজ পুরোপুরি বন্ধ করা যায় কি না ভাবছে দিল্লি সরকার। ভিন রাজ্যের যানবাহন দিল্লিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথাও ভাবা হচ্ছে। এদিকে দিল্লী ছাড়াও দূষিত শহরের তালিকায় আছে ভারতের আরও দুই শহর। আন্তর্জাতিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা সুইস গ্রুপ আই কিউএয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী দূষিত শহরগুলোর তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ভারতের শহর কলকাতা। বাতাসের গুণগত মান ২০৬। অন্যদিকে তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা মুম্বাইয়ের একিআই ছিল ১৬২।