অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জরুরি নির্দেশের ভিত্তিতে রাজধানী দিল্লি ও এর আশেপাশের বেশ কয়েকটি রাজ্যের স্কুল এবং একটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। বাতাসে বিষাক্ত কণার উপস্থিতি ও ধোঁয়াশা বেড়ে যাওয়ায় বুধবার থেকে এই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷
দিল্লিসহ আশেপাশের বিভিন্ন রাজ্যের বাতাসে পুরু, ধূসর ধোঁয়াশার পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দিল্লিতে সাময়িক লকডাউন ঘোষণা সংক্রান্ত এক পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত প্যানেল দূষণ রোধ করতে এবং দিল্লির পরিবেশগত সংকট নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
স্কুলের পাশাপাশি প্যানেলটি কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট নামের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করেছে।
এছাড়া রাজ্যগুলোর সব বেসরকারি অফিসে অর্ধেক কর্মচারী নিয়ে কাজ করতে ‘উৎসাহিত’ করার নির্দেশ দিয়েছে।
গত দুই দিনে নয়াদিল্লির বাতাসে বিষাক্ত কনার উপস্থিতি কিছুটা কমলেও বুধবারও বাতাসে এর পরিমাণ এখনও নিরাপদ মাত্রার চেয়ে সাত গুণ বেশি ছিল। এমনকি শহরের কিছু অংশে এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৩০০ মাইক্রোগ্রামের ওপরে ছিল।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী সপ্তাহে শীত বাড়ার আগেই বাতাসের অবস্থা আরও অনেক খারাপ হবে, ধোঁয়াশা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে দিল্লিতে বাতাসে বিপজ্জনক উপাদানের মাত্রা ‘গুরুতর’ পরিমাণে বেড়ে যায় এবং বাসিন্দারা মারাত্মক দূষণের মুখে পড়ে। এরপর গত সপ্তাহে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই পরিস্থিতিকে ‘সংকট’ আখ্যা দিয়ে রাজ্য ও ফেডারেল সরকারকে ‘দ্রুত ও কার্যকরী’ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
দেশটির রাজধানী দিল্লির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। প্রতি বছরই দূষিত শহরের তালিকায় এটি শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে।
শীতকালে শহরটিতে বায়ু দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়। কারণ তখন আশেপাশের রাজ্যগুলোতে শস্যের বর্জ্য পোড়ানো হয়। এসময় বর্জ্য পোড়ানো ধোঁয়া বাতাসে ভেসে এসে দিল্লিতে বসবাসকারী দুই কোটি মানুষের জীবন দূর্বিষহ করে দেয়।
এছাড়া শিল্প-কারখানাতে দূষণ রোধ সংক্রান্ত প্রযুক্তি না থাকা এবং বিভিন্ন সামাজিক উৎসব ও নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় শীতকালে বায়ু দূষণ বেড়ে যায়।
এক গবেষণায় জানা যায়, প্রতিবছর দেশটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ শুধুমাত্র বায়ু দূষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
দিল্লিতে মাঝে মাঝেই গাড়ি চলাচলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, নির্মাণকাজ বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে দূষণ কমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্ত্র প্রয়োজন তুলনায় এই পদক্ষেপ খুবই নগন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরণের পদক্ষেপ, সমস্যা নিরসনে তেমন কোনও ভূমিকা রাখতে পারে না।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২