অনলাইন ডেস্ক :
দানিল মেদভেদেভকে রোববার ইউএস ওপেনের ফাইনালে সরাসরি সেটে পরাজিত করে ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করেছে নোভাক জকোভিচ। এর মাধ্যমে টেনিস ইতিহাসে নিজেকে অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড় হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন সার্বিয়ান এই তারকা। ৫০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান মার্গারেট কোর্টের সর্বকালের সর্বোচ্চ ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ডে এখন ভাগ বসালেন জকোভিচ। ফাইনালে ৩৬ বছর বয়সী জকোভিচ ৬-৩, ৭-৬ (৭/৫), ৬-৩ গেমে মেদভেদেভকে পরাজিত করেছেন। নিউ ইয়র্কে আর্থার এ্যাশ স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হবারও রেকর্ড গড়েছেন জকো। পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে জকোভিচ একটি সাদা জ্যাকেট পড়ে এসেছিলেন যেখানে লেখা ছিল ২৪।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা কোথা থেকে শুরু করবো। অবশ্যই এটা আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছু। এর ব্যাখ্যা দেয়া কঠিন। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল এই খেলায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবো। তবে কখনো কল্পনা করিনি ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম নিয়ে কথা বলবো। কিন্তু গত দুই বছর যাবত আমার কাছে মনে হয়েছে সুযোগ হয়তো আছে, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। ইতিহাস আমার সামনে আছে, কেন সেটাকে আমি গ্রহণ করবো না।’ প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চারবার এক মৌসুমে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড গড়েছেন জকোভিচ। ফাইনালে জয়ী হয়ে স্প্যানিশ তরুণ কার্লোস আলাকারাজকে পিছনে ফেলে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছেন এই সার্বিয়ান।
এ বছরই তিনি জয় করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ও ফ্রেঞ্চ ওপেন। জুলাইয়ে উইম্বলডনের ফাইনালে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত অবশ্য আলকারাজের সাথে আর পেরে উঠেননি। জকোভিচের কোচ সাবেক তারকা গোরান ইভানিসেভিচ বলেছেন, ‘কিছু কিছু মানুষ জন্মগত ভাবেই প্রতিভাবান থাকে, জকোভিচ তাদের মধ্যে একজন। টেনিসে তার মত খেলোয়াড় আমি কমই দেখেছি। টেনিস ইতিহাসে এটা অনেক বড় একটি অর্জন।’
এ দিকে ক্যারিয়ারে পাঁচ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে এনিয়ে চতুর্থ পরাজয়ের স্বাদ পেলেন মেদভেদেভ। এর সবগুলোই ছিল জকোভিচ ও রাফায়েল নাদালের বিপক্ষে। মেদভেদেভ বলেছেন, ‘প্রথমত আমি নোভাককে বলতে চাই, এখনো তুমি এখানে কি করছো। আমি জানিনা কোথায় গিয়ে তুমি থামবে। ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম, অবিশ্বাস্য। এর বিপরীতে আমার আছে মাত্র ২০টি শিরোপা, আর তোমার আছে ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম।’
২০২১ সালে ইউএস ওপেনের ফাইনালে জকোভিচকে সরাসরি সেটে পরাজিত করে মেদভেদেভ ক্যারিয়ারের একমাত্র স্ল্যাম শিরোপা জয় করেছিলেন। ঐ ফাইনালে পরাজিত হবার মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে রড লেভারের পর প্রথম কোন খেলোয়াড় হিসেবে এক মৌসুমে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জয়ের সুযোগ হারিয়েছিলেন জকোভিচ। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে গত বছর ইউএস ওপেনে খেলতে পারেননি জকোভিচ। এবার দ্বিতীয় বাছাই হিসেবে খেলতে নেমে বাজিমাত করলেন। তিন ঘন্টা ১৬ মিনিটেই লড়াইয়ে কখনোই জকোভিচকে মেদভেদের তুলনায় দূর্বল মনে হয়নি।
প্রথম সুযোগেই ব্রেক পয়েন্ট তুলে নিয়ে ২-০ গেমে এগিয়ে যান। এর থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেননি মেদভেদেভ। প্রথম সেটটি জকোভিচের জন্য সহজ হলেও দ্বিতীয় সেটে দারুন প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মেদভেদেভ। জকোভিচও অবশ্য ছেড়ে কথা বলেননি। ৪-৩ গেমে এগিয়ে যাবার পর মেদভেদেভের সামনে সুযোগ আসে ম্যাচের প্রথম ব্রেক পয়েন্ট আদায় করে নেবার।
কিন্তু জকোভিচ দারুনভাবে সেটিকে প্রতিহত করেন। ৫-৬ গেমে পিছিয়ে থাকার সময় জকোভিচ দুইবার ডাবল ফল্ট করলে মেদভেদেভের সামনে সেট পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ আসে। কিন্তু সেটা রক্ষা করে শেষ পর্যন্ত সেটটি টাইব্রেকে গড়ায়। ৫-৪ পয়েন্টে এগিয়ে থাকার সময় জকোভিচ পরবর্তী তিন পয়েন্ট তুলে নিয়ে সেটটি নিজের করে নেন। এর মাধ্যমে এক ঘন্টা ৪৪ মিনিটে দীর্ঘ সেটটির নিষ্পত্তি হয়। তৃতীয় সেটে জকোভিচ আবারো দাপট দেখিয়ে দুইবার ব্রেক পয়েন্ট তুলে নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা