অনলাইন ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। একইসঙ্গে হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে মশাল মিছিল করেছেন তারা। সোমবার রাতে নিহতদের দাফন শেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায় এ বিক্ষোভ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই ভাইয়ের দাফন শেষে রাত ৯টার দিকে স্বজন ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা আগুন জ্বালিয়ে মশাল নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভকারীরা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান। সেইসঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। এ বিষয়ে উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাসান খান বলেন, ‘হত্যাকা-ের পর থেকে স্বজন ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। সন্ধ্যায় নিহত দুই ভাইয়ের জানাজা হয়েছে। রাতে কাঁচপুর রহিম স্টিলের সামাজিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। পরে কবরস্থানের পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এ সময় আগুন জ্বালিয়ে মশাল নিয়ে অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানান তারা।’ সড়ক অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম। তিনিবলেন, ‘জানাজা ও দাফন শেষে কিছু লোকজন সড়ক অবরোধ করেছেন। খুব অল্প সময়ের জন্য তারা সেখানে বিক্ষোভ করেছেন।’ এর আগে বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুই ভাইয়ের মরদেহ নিজ এলাকায় আনা হয়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। হত্যাকা-ের ঘটনায় একই দিন দুপুরে নিহতদের মেজো বোন শামসুন নাহার বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় নিহতদের চাচা মহিউদ্দিন ও চাচাতো ভাই মোস্তফাসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কাঁচপুর পাঁচপাড়া এলাকায় জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত দুই ভাই হলেন ওই এলাকার মৃত সানাউল্লাহ মিয়ার বড় ছেলে আসলাম সানি (৪৮) ও ছোট ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম রনি (৩৫)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মেজো ভাই রফিকুল ইসলাম (৪০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনায় পর থেকে অভিযুক্ত চাচাতো ভাই মোস্তফা ও তার পরিবার সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। রোববার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্তদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় স্থানীয় লোকজন। এতে বসতভিটাসহ বেশ কয়েকটি টিনের ঘর পুড়ে যায়। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। স্বজনরা জানান, চাচা মো. মহিউদ্দিন ও তার ছেলে মোস্তফার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল তিন ভাইয়ের। এর মধ্যে তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে একটি সড়কের ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। ওই ড্রেনে পাইপ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন আসলাম সানি। এ নিয়ে চাচাতো ভাই মোস্তফার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে উত্তেজিত হয়ে চাচাতো ভাই মোস্তফার নেতৃত্বে সানির ওপর হামলা চালানো হয়। খবর শুনে সানির দুই ভাই রনি ও রফিকুল ইসলাম এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানি ও রনির মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি