অনলাইন ডেস্ক :
সম্প্রতি আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে শীত মৌসুমে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে বন্ধ হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা। এতে দেশটির জনসংখ্যার একটি বড় অংশ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। অনেকে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের মুখে আহার তুলে দিচ্ছেন। এদেরই একজন আট সন্তানের জননী দেলারাম রাহমাতি। কোনো মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই রয়েছে রাহমাতির। তবে তাতে দশ জনের সংসারে অন্ন জোগানোর সংস্থান নেই। কাজকারবার হারানো ভিটেহারা আফগান এই মা বাধ্য হয়েই বেচে দিয়েছেন নিজের দুই মেয়েকে। তাতেও সমস্যা কমেনি। এরপর বিক্রি করেছেন নিজের কিডনিও। অস্ত্রোপচারের ক্ষতও শুকিয়ে ওঠেনি এখনো। জোগাড় করতে হচ্ছে অসুস্থ দুই ছেলের হাসপাতালের খরচ। স্বামীর জন্য ওষুধ। শীতের দাপটের মাঝেই খরা এবং করোনার প্রকোপে কাজ হারানো পরিবারে আশার আলোও নিভু নিভু। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলছে, প্রায় চার বছর আগে আফগানিস্তানের বাদগিস প্রদেশের ভিটেমাটি ছেড়েছিলেন দেলারাম রাহমাতি। পরে উঠেছেন হেরাতের বস্তিতে। তবে আট ছেলেমেয়ের মুখে খাবার জোটাতে দিশেহারা অবস্থা তার। খিদের জ্বালায় মাস কয়েক আগে নিজের মেয়েদের বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। রাহমাতির কথায়, অচেনা লোকেদের হাতে মেয়েদের বেচে দিয়েছি। একজনের বয়স আট আর অন্যটার ছয়। প্রাপ্তবয়স্ক হলে রাহমাতির ওই দুই মেয়েকে তুলে দিতে হবে ক্রেতাদের হাতে। এক লাখ আফগান মুদ্রায় (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ হাজার ৯২৭ টাকা) একেকটি মেয়েকে বিক্রি করে হাতে কিছুটা অর্থ এসেছে বটে। তবে তাতে রাহমাতির সংসারে সাশ্রয় হয়নি। দুই ছেলের চিকিৎসায় সে অর্থও এরইমধ্যে শেষ! রাহমাতির এক ছেলে ভুগছে মানসিক অসুস্থতায়। অন্যজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। স্বামীর জন্য নিয়মিত ওষুধও কিনতে হয়। উপায় না পেয়ে দু’মাস আগে দেড় লাখ আফগানিতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা) নিজের ডান কিডনিও বিক্রি করেছেন রাহমাতি। তবে ওই অস্ত্রোপচারের পর থেকে নিজেও অসুস্থ। কিন্তু, চিকিৎসা করানোর জন্য অর্থ নেই তার হাতে। রাহমাতি বলেন, মেয়েদের ভবিষ্যৎ বিক্রি করাটা যন্ত্রণার। তবে ঋণের বোঝা নামাতে আর খিদের জ¦ালায় আমার কিডনিও বেচতে বাধ্য হয়েছি।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু