দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপলি বিভাগের ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এদিকে, একই বেঞ্চ দুই শিশুর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে জাপানি মা নাকানো এরিকোর করা আদালত অবমাননার অভিযোগও খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করা নিয়ে জাপানি স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর পাল্টা দালত অবমাননার অভিযোগও আমলে নেননি আদালত।
গত ১৭ মে জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে বিদেশে বেড়ানোর জন্য আদালতের অনুমতি নিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন জাপানি মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
আবেদনে বলা হয়, দুই মেয়ে শিশুকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে অনেক দিন কাটিয়েছেন। তারা অবকাশ কাটাতে দেশের বাইরে বেড়ানোর জন্য যেতে চান। সেটা জাপানও হতে পারে। একই সঙ্গে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে শিশুদের বাবা বাংলাদেশি নাগরিক ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আবেদন করেন মা নাকানো এরিকো। এর পরেই আবার বাবা ইমএরান শরীপও বাচ্চাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলে পাল্টা আদালত অবমাননার আবেদন করেন। সবগুলো আবেদনি বৃহস্পতিবার খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাপানি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি দুই কন্যাশিশু আপাতত তাদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর হেফাজতেই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ওই আদেশে বলা হয়, শিশু দুটির বিষয়ে ঢাকার পারিবারিক (সহকারি জজ) আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা মায়ের কাছেই থাকবে। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের আদেশে গত বছর ১২ ডিসেম্বর থেকে মায়ের হেফাজতেই রয়েছে শিশু দুটি। তবে, তাদের বাবা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
গত বছর ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা বাংলাদেশে তাদের বাবা ইমরান শরীফের হেফাজতে থাকবে বলে রায় দেন। এতে বলা হয়, যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে থাকেন এবং কাজ করেন, তাই তিনি নিজের সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে বছরে তিন বার ১০ দিন করে দুই সন্তানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারবেন।
হাইকোর্ট বিভাগের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মা। এ আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত বছর ১২ ডিসেম্বর মায়ের কাছে শিশু দুটিকে দিতে তাদের বাবাকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম