নিজস্ব প্রতিবেদক:
কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে দুদিন ধরে তালাবদ্ধ রয়েছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন। তৃতীয় শ্রেণিতে এডহক ভিত্তিতে কর্মরত ২২ জন কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গত বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিট থেকে ভাইস চ্যান্সেলরের কার্যালয় তালাবদ্ধ করা হয়। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, অভ্যন্তরীণ রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, সিনিয়র শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ভাইস চ্যান্সেলরকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা আরও জানান, ৩০ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওই স্মারকলিপিতে ১৪ দফা তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী বাছাই বোর্ড দেওয়ার অনুরোধ করা হলো। বিজ্ঞাপিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে শতভাগ অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া। অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের শুধু মৌখিক ভাইভা বোর্ডের ব্যবস্থা করা। বিজ্ঞাপিত ১৫ পদের বিপরীতে ২২ জন এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীকে স্থায়ী করা। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের অসামঞ্জস্য পদকে সামঞ্জস্য করে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা। যথাসময়ে তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করা। ড্রাইভারদের অধিকাল ভাতাসহ টিএডিএ প্রদান। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য পৃথক মিনিবাসের ব্যবস্থা করা। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ টাঙ্গাইলের লোকদের নিয়োগ দেওয়া। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের নিয়োগে পোষ্য কোঠা নির্ধারণ করা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মোটরকার ও মোটরসাইকেলের জন্য করপোরেট লোনের ব্যবস্থা করা। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির জন্য একটি কার্যালয়ের ব্যবস্থা করা। তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেশিও অনুযায়ী গেস্ট হাউজের ব্যবস্থা করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক এবং কারিগরি কর্মচারীদের দাপ্তরিক সাজ-পোশাকের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র এবং বাংলাদেশের গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কোনো চাকরিজীবী চাকরিরত অবস্থায় মারা গেলে মৃত কর্মচারীর পরিবার থেকে একজনকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া। তারা আরও জানায়, স্মারকলিপি দেওয়ার পরেও ২ নভেম্বর কেয়ারটেকার পদের নিয়োগ বোর্ড রাখায় তারা ভাইস-চ্যান্সেলরের কার্যালয় তালাবদ্ধ করে। এ বিষয়ে আন্দোলনকারী ও তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি এস.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির (মাভাবিপ্রবিতৃকস) কার্যকরী পরিষদ ৩৯তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণির সব সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট এবং জরুরি সেবাসমূহ চালু থাকবে। এ ছাড়া অন্যান্য সব পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে। তিনি আরও জানান, আমাদের তৃতীয় শ্রেণির আন্দোলনের সঙ্গে চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতিও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ভিসির সময়ে পোস্ট এডহকে নিয়োগ পেয়েছিল তারা। বিভিন্ন বিভাগে নতুন নিয়োগের জন্য আমরা ১৫টি পদ পেয়েছি। এরইমধ্যে দুটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার ছিল একটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা। তবে আন্দোলনরতরা ওই নিয়োগ পরীক্ষা নিতে না দিয়ে ও বিভিন্ন দাবি নিয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। আজ দুইদিন হল আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি ইউজিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষ আরও সাতটি পদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান আন্দোলনরত কর্মচারীদের নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন, তবে তারা সেই আশ্বাস মেনে না নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা