নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি মৌসুম আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। তবে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার পরপরই দুবলার চরের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন অনেক জেলে। সাগরে যেতে যে যার মতো প্রস্তুত করছেন জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলার। কেউ কেউ নতুন ট্রলারের ব্যবস্থা করেছেন। আবার কেউ পুরাতনটিকে মেরামত করে নিয়েছেন। তবে জেলেদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। বনবিভাগের পাস নিয়েই তারা রওনা হবেন সাগরপাড়ের দুবলার চরে। সাগরে এখন আর দস্যুদের উৎপাত নেই। তারপরও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি মাথায় নিয়েই দুবলায় যাত্রা শুরু করবেন হাজার হাজার জেলে। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হওয়া এ মৌসুম চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। টানা চার মাস সেখানে থাকতে হবে জেলেদের। তাই সাগরপাড়ে গড়তে হবে তাদের অস্থায়ী থাকার ঘর, মাছ শুকানোর চাতাল ও মাচা। তবে সেসব তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে না সুন্দরবনের কোনো গাছপালা-লতাপাতা। তাই বনবিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী চরের উদ্দেশ্যে যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া জেলেরা তাদের ট্রলারে করে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এখন এসব সামগ্রী প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগেরহাটসহ উপকূলের কয়েক জেলার জেলে-মহাজনরা। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, বনবিভাগের কাছ থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে নিজ নিজ এলাকা থেকে রওনা হয়ে জেলেদের সরাসরি যেতে হবে দুবলার চরে। যাওয়ার পথে সুন্দরবনের কোনো নদী-খালে প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবেন না সমুদ্রগামী এ জেলেরা। এ ছাড়া দুবলার চরে অবস্থান করার সময় সাগর ছাড়া সুন্দরবনের খালে প্রবেশ ও সেখানে মাছ ধরতে পারবেন না তারা। দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের নেতা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে এখন আর দস্যুতার ভয় নেই। তাই অনেকটা স্বস্তি নিয়েই সাগরে যান জেলেরা। তবে বনবিভাগ থেকে এখনো সব পাস পারমিট পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে এবারও উপকূলের বিভিন্ন এলাকার সাড়ে ছয় হাজার বহরদারের অধীনে প্রায় ৯-১০ হাজার জেলে সমবেত হবেন দুবলার চরে। ট্রলার নিয়ে গভীর সাগর থেকে আহৃত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে শুঁটকি করবেন তারা। বনবিভাগের কাছ থেকে পাস নিয়ে শনিবার থেকে তারা সাগরে যেতে শুরু করবেন। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এ বছরও চরে জেলেদের থাকা ও শুঁটকি সংরক্ষণের জন্য এক হাজার ৩০টি ঘর, ৬৩টি ডিপো এবং ৯৬টি দোকান স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গত শুঁটকির মৌসুমে দুবলার চর থেকে বনবিভাগের রাজস্ব আদায় হয়েছিল তিন কোটি ৮৫ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ টাকা। এবারও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তার চেয়েও বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি