নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন দুর্গাপূজায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। এরমধ্যে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৫০ যুবকের বিষয়টি নতুন করে ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। নাশকতার আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পুলিশসহ প্রস্তুত আছে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পূজা উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিরাপত্তা-ঝুঁকি দুই ধরনের হয়। একটা হল জঙ্গি হামলার আশঙ্কা। আর অন্যটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণদের উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করা। আমরা জঙ্গি হামলার শঙ্কা আমরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। কারণ গত এক মাস ধরে আমরা একটা বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আপনারা জানেন ৫০ জন ছেলে তাদের বাসা-বাড়ি ছেড়েছে। তারা কোথায় ট্রেনিং নিচ্ছে আমরা এখনও তা জানি না। তবে আমাদের গোয়েন্দারা এ নিয়ে কাজ করছে, আমরা আশা করি তারা ফিল্ডে কোনো অপারেশনে আসার আগেই তাদের ধরে ফেলতে পারব। আর অন্যদিকে গুজব রোধে আমাদের সাইবার মনিটরিং চলছে। অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে, ভুয়া পোস্ট দিয়ে সহিংসতার ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। গত বছর কুমিল্লায় একটি ম-পে কোরআন শরীফ রাখা নিয়ে যে ঘটনা হলো এবারও এ রকম অপতৎপরতা থাকতে পারে। এমন ঘটনা প্রতিরোধ করতে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমরা সারাদেশের ডিসি-এসপিদের নিয়ে মিটিং করেছি। কোথাও এ ধরনের কোনো অপতৎপরতা পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডিসি-এসপিরা ওইসব জায়গায় চলে যাবেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণদের নিয়ে এ ঘটনা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করবেন। যারা এ গুজব ছড়াবেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। পূজা উদযাপনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা প্রস্তুত আছি যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই নির্বিঘেœ পূজা উদযাপন করতে পারে। আমাদের পাশাপাশি এবার ম-পে প্রতিমা থাকা অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পাহাড়া দিতে আয়োজক কমিটিকে আমরা বলেছি যেন কোনো ভাঙচুরের ঘটনা না ঘটে। কারণ আমরা দেখেছি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা তখনই ঘটে যখন ম-প ফাঁকা থাকে। রাজধানীর পূজাম-পগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরীতে ২৪২টি ম-পে এবার পূজা উদযাপন করা হবে। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে। এগুলোতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সিসিটিভি স্থাপন করে মনিটর করা হবে। পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে ভিভিআইপি নিরাপওা নিশ্চিত করা হবে। অন্যগুলোতে মন্দিরের গুরুত্ব অনুযায়ী কোথাও একজন থানার উপপরিদর্শক (এসআই), কোথাও একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আনসার ও মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। নারী-পুরুষদের ম-পে ঢুকতে ও বের হতে আলাদা পথ ব্যবহার করতে হবে। কেউ কোনো ধরনের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে ম-পে আসতে পারবে না, এমনটা হলে সেগুলো ম-পের গেটের বাইরে রেখে ভেতরে ঢুকতে হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম