November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 19th, 2022, 3:26 pm

দুর্নীতির আখড়া দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ইউএইচএফপিওর মদদে বেপরোয়া হারুন- মোশাররফ সিন্ডিকেট

জেলা প্রতিনিধি, ফেনী :
দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে দাগনভ‚ঞূ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হসপিটালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে হেড ক্লার্ক মো. হারুন ও পরিসংখ্যানবিদ মোশাররফ হোসেন। তাদের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হসপিটালের শিকড় থেকে শিখর এমন অভিযোগ হসপিটাল সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সাধারণ জনগন চিকিৎসা নিতে আসলে তাকে দিতে হবে টাকা। আর এসব টাকার ভাগবাটোয়ারার একটি অংশ যায় খোদ হসপিটালের ইউএইচএফপিও ডা. তৌহিদুল ইসলামের পকেটে। আর এসব টাকার ভাগবাটোয়ারা করেন হারন ও মোশাররফ। এ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হসপিটালের ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। হসপিটালের স্বাস্থ্য সহকারীদের বিলেও ভাগ বসান এ সিন্ডিকেট। কমিউনিটি ক্লিনিকের বিল থেকেও টাকা কর্তন করে রাখে হারুন ও মোশাররফ। এছাড়াও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অনেক প্রবাসীকে ফাইজারের টিকা এবং টিকা না দিয়ে শুধু এন্ট্রি করে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রদানেরও অভিযোগ রয়েছে হারুন ও মোশাররফের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, হারুন-মোশাররফ ও ইউএইচএফপিওর যোগসাজশে ২৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিবহণ ও ষ্ট্রেশনারি বিলের প্রতিটিতে ১৩ হাজার ৩’শ টাকার পরিবর্তে পরিশোধ করেন মাত্র ৬ হাজার টাকা। বাকি ৭ হাজার ৩’শ টাকা করে (মোট ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮’শ টাকা) প্রতি ক্লিনিকের বিল থেকে কর্তণ করে রাখে। এছাড়া ২৪ জন স্বাস্থ্য সহকারিদের করোনাকালীন টিকার বিল ও অন্যান্য বিল বাবদ ৩২ হাজার ৮’শ টাকার পরিবর্তে প্রতিজনকে দেয়া হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। প্রতিজনের বিল থেকে ১৬ হাজার ৮’শ টাকা করে ( ৪ লক্ষ ৩ হাজার ২’শ টাকা) কর্তণ করে রাখা হয়। অপরদিকে ফিল্ড স্বেচ্ছাসেবকদের ওরিয়েন্টেশনের টাকা ৫ হাজার ২’শ টাকার স্থলে দেয়া হয়েছে ৪ হাজার টাকা করে। বিলের টাকা কেন কর্তন করা হয়েছে এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সহকারিরা জানতে চাইলে হারুন ও মোশাররফ জানান এ বিলের পেমেন্ট আনতে সিভিল সার্জন অফিসে ও অন্যান্য অফিসে খরচ করতে হয়েছে সে বাবদ এ টাকা কর্তণ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে হেড ক্লার্ক মো. হারুন ও পরিসংখ্যানবিদ মোশাররফ হোসেন কোন মন্তব্য না করে বলেন আমরা কিছুই জানিনা সব ইউএইচএফপিও স্যার জানেন। হসপিটালের ইউএইচএফপিও ডা. তৌহিদুল ইসলাম, ডা. আকবরের প্রত্যক্ষ মদদে হসপিটালকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে হেড ক্লার্ক হারুন ও পরিসংখ্যানবিদ মোশাররফ হোসেন এমন অভিযোগ হসপিটাল সংশ্লীষ্টদের। হসপিটালে এসব দুর্নীতি বন্ধে ও সেবার মান নিশ্চিতে ইউএইচএফপিও ডা. তৌহিদুল ইসলাম, ডা. আকবর, হেড ক্লার্ক হারুন ও পরিসংখ্যানবিদ মোশাররফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের অন্যত্র বদলীর বিষয়ে উপরোস্থ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবী হসপিটাল সংশ্লীষ্টদের এবং সাধারণ রোগীদের।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হসপিটালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম নিজের বিষয়ে ওঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি জানান, হসপিটালে কোন প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়ম নেই। তারপরও যদি কারো বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুস সালেহীন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।