November 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 14th, 2023, 8:33 pm

দেড়শর কাছে জয়সওয়াল, রোহিতেরও সেঞ্চুরি

অনলাইন ডেস্ক :

জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরে বিরাট কোহলির সে কী হাসি! উইকেটে সঙ্গী যাশাসবি জয়সওয়ালের সঙ্গে ‘ফিস্ট বাম্প’ করলেন। তার এই উদযাপন কোনো মাইলফলক ছুঁয়ে নয়, স্রেফ ওই বাউন্ডারির জন্যই। ৮০ বল খেলার পর যে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পেলেন তিনি! এতেই ফুটে উঠছে, কতটা মন্থর ক্রিকেটের দিন ছিল এটি। তবে এমন দিনেও প্রতিভার আলো ঠিকই ছড়িয়েছেন জয়সওয়াল। রেকর্ডময় দিনে শতরানের স্বাদ পেয়েছেন রোহিত শর্মাও। ডমিনিকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৯০ ওভারে কেবল ২৩২ রান তুলেছে ভারত। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ উইকেট নিতে পেরেছে স্রেফ দুটি। প্রথম দিনেই ক্যারিবিয়ানরা ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচে সময় আছে অনেক। রানের তাড়া তাই নেই। ২ উইকেটে ৩১২ রান তুলে ভারত এগিয়ে গেছে ১৬২ রানে। প্রথম দিন শেষে ৪০ রানে অপরাজিত থাকা জয়সওয়াল দ্বিতীয় দিনে পুরোটা সময় ক্রিজে থেকে অপরাজিত আছেন ১৪৩ রানে।

টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করা সপ্তদশ ভারতীয় ব্যাটসম্যান তিনি। ভারতের হয়ে অভিষেকে ওপেন করে সেঞ্চুরি করেছেন তার আগে কেবল আর দুই জন। অভিষেকে দেশের বাইরে জয়সওয়ালের চেয়ে বেশি রান করতে পারেননি ভারতের আর কেউ। ১৯৯৬ সালে লর্ডসে সৌরভ গাঙ্গুলির ১৩১ রান ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। জয়সওয়ালের সামনে এখন হাতছানি অভিষেকে ভারতের হয়ে শিখর ধাওয়ানের ১৮৭ রানের রেকর্ড ভাঙার। একটি জায়গায় অবশ্য ভারতের সবাইকে এখনই ছাড়িয়ে গেছেন জয়সওয়াল। প্রথম ভারতীয় হিসেবে খেলেছেন অভিষেকে ৩৫০ বল। অভিষেকে সবচেয়ে বেশি বল খেলার আগের রেকর্ড ছিল ১৯৮৪ সালে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ৩২২ বল। রোহিতের সঙ্গে জয়সওয়ালের উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে ২২৯। এশিয়ার বাইরে ভারতের সেরা উদ্বোধনী জুটিও এটিই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও শুরুর জুটিতে ভারতের সর্বোচ্চ রান এটি। ২০০২ সালে মুম্বাইয়ে বিরেন্দর শেবাগ ও সঞ্জয় বাঙ্গারের ২০২ রানের জুটিকে পেছনে ফেলে দেয় এই জুটি।

সুদীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে ভারত এই প্রথমবার প্রতিপক্ষের স্কোর পেরিয়ে গেল উদ্বোধনী জুটিতেই। রোহিত আউট হয়েছেন ১০৩ রান করে। তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরি এটি। দেশের বাইরে ২৭ টেস্ট খেলে শতরানের স্বাদ পেলেন তিনি মাত্র দ্বিতীয়বার। ভারতের বাইরে তার আগের সেঞ্চুরিটি ছিল ২০২১ সালে ওভালে। আগের দিনের ৮০ রানের জুটি থেকে নতুন দিন শুরু করেন রোহিত ও জয়সওয়াল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আঁটসাঁট ব্যাটিংয়ে শুরুতে দুজনই ছিলেন সতর্ক। মন্থর ও নিচু বাউন্সের উইকেটে শট খেলা ছিল কঠিন। জোর করে শট বানিয়ে খেলার চেষ্টাও করেনতি তারা দুজন। দিনের প্রথম বাউন্ডারি আসে দশম ওভারে। ১০৪ বলে ফিফটিতে পা রাখেন জয়সওয়াল, ১০৬ বলে রোহিত। প্রথম সেশনে ৩২ ওভার ব্যাট করে কেবল ৬৬ রান তুলতে পারে ভারত। দ্বিতীয় সেশনে শতরানে পৌঁছে যান দুজনই। আলিক আথানেজের বলে সিঙ্গেল নিয়ে আগে সেঞ্চুরি করেন জয়সওয়াল। ২১৫ বল লাগে তার তিন অঙ্ক ছুঁতে। একটু পর আথানেজের বলেই বাউন্ডারি মেরে ২২০ বলে শতরান পূর্ণ করেন রোহিত। তবে পরের বলেই কিপারের কাছে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ভারতীয় অধিনায়ক। ৭৬তম ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত আথানেজ। প্রথম উইকেটের হাত ধরে দ্বিতীয় উইকেট আসে দ্রুতই। তিনে নামা শুবমান গিল ৬ রান করে দ্বিতীয় স্লিপে আথানের হাতেই ধরা পড়েন জোমেল ওয়ারিক্যানের বাঁহাতি স্পিনে। প্রথম সেশনের পর বুকের ব্যথায় আর বোলিং করতে পারেনি রাকিম কর্নওয়াল। এই অফ স্পিনারকে না পেয়ে ভুগতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৯ জন বোলার ব্যবহার করেন ক্যারিবিয়ান অধিনাক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। শেষ সেশনে তবু কোনো উইকেট ধরা দেয়নি তাদের। খানিকটা দুর্ভাগ্যও অবশ্য আছে ক্যারিবিয়ানদের। স্পিনাররা ভালো টার্ন পাচ্ছেন দেখে দ্বিতীয় নতুন বল নিতে ১০০ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। নতুন বলে তৃতীয় ওভারে কেমার রোচের বল লাগে জয়সওয়ালের পায়ে।

জোরাল আবেদনে আউট দেননি আম্পায়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ততক্ষণে দুটি রিভিউই হারিয়ে ফেলেছে। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, আউট ছিলেন জয়সওয়াল। তার রান ছিল তখন ১৩৩। দিনের বাকি সময়টাও নিরাপদে পার করে দেন জয়সওয়াল ও কোহলি। দারুণ ধৈর্য দেখিয়ে ৯৬ বলে ৩৬ রান নিয়ে দিন শেষ করেন কোহলি। অভিষেকে দুই দিন শেষেও অপরাজিত থেকে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়েন জয়সওয়াল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৫০
ভারত ১ম ইনিংস: ১১৩ ওভারে ৩১২/২ (জয়সওয়াল ১৪৩*, রোহিত ১০৩, গিল ৬, কোহলি ৩৬*; রোচ ১৬-৩-৩৮-০, জোসেফ ১৪-১-৬৫-০, কর্নওয়াল ১১-৩-২২-০, ওয়ারিক্যান ৩৪-৩-৮১-১, হোল্ডার ১৪-৫-২৮-০, ব্র্যাথওয়েট ৬-০-১২-০, আথানেজ ১৩-২-১৩-১, রিফার ৩-০-৯-০, ব্ল্যাকউড ২-০-৪-০)।