সারাদেশে বাড়ছে কক্সবাজারের সুপারির কদর। আর এবারে কক্সবাজারে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই সুপারির বাগান মালিকদের মুখে হাসিও ফুটেছে।
জেলার তিন হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে প্রায় এক কোটি ২৭ লাথ ৫০ হাজারটি গাছে ১২ হাজার ২৫০ মেট্রিকটন সুপারি উৎপাদিত হয়েছে।
প্রতি টন সুপারি বিক্রি হয় দুই লাখ টাকায়। সর্বমোট যার দাম ২৪৫ কোটি টাকা।
এরমধ্যে সব চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়।
কক্সবাজার জেলা কৃষি অফিসার কবির হোসেন জানান, জেলার উখিয়া ও টেকনাফে প্রায় দুই হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়।
কক্সবাজার পান সুপারি বাজার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক জানান, এই অঞ্চলের সুপারির খ্যাতি থাকার কারণে দেশ ও বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারের সুপারি ছড়িয়ে যায় সারাদেশে।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজার থেকে ট্রাকে ট্রাকে সুপারি যায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এছাড়া শুধু দেশের ভিতরে নয়, দেশের বাইরেও যেমন ইংল্যান্ড, কানাডা, সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে কক্সবাজারের সুপারি।
উখিয়া সোনারপাড়া বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাগান মালিক মোহাম্মদ শাহ্ জাহান জানান, বিপুল সম্ভাবনাময় এই সুপারি এবারে বাম্পার ফলন হয়েছে কক্সবাজারে। এছাড়া শুধু উখিয়ার সোনারপাড়া সুপারী বাজারে সপ্তাহের দুই হাটে কোটি টাকারও বেশী সুপারি বেচা-কেনা হয়।
সোনারপাড়া বাজার ঘুরে দেখা যার, হাজার হাজার সুপারি বাগান থেকে টমটম করে নিয়ে এসেছে বিক্রির জন্য। এখান থেকে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এক পনে ৮০ টি সুপারি এবং ১৮ পনে অর্থাৎ এক হাজার ২৮০ টি সুপারি এক কর্ন হিসাবে বেচাকেনা হয়। এক কর্ন বড় সাইজের সুপারির পাইকারী মূল্যে বিক্রি হয় চার হাজার ৫০০ টাতা থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
ঢাকা থেকে সুপারি কিনতে আসা ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম জানান, সারাদেশে কক্সবাজারের সুপারির কদর বেশি। এছাড়া কক্সবাজারের পাইকারি বাজারগুলোতে সুপারি খুবই সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। এখান থেকে নিয়ে যাওয়া সুপারি ঢাকায় মজুদ করা হয়।
তিনি আরও জানান, মজুদ করা এসব সুপারি ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং রপ্তানি করা হয় বিদেশেও।
সুপারি বিক্রেতা নজরুল ইসলাম জানান, তিনি ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসা করে সংসার নিয়ে দিব্যি সুখে আছেন।
নজরুল ইসলাম জানান, পাকিস্তান আমল থেকেই কক্সবাজারের সুপারির সুখ্যাতি রয়েছে। তখন এখানকার সুপারির বেশিরভাগ পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখান থেকে আবার এসব বিদেশে বিক্রি হতো।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার উখিয়া টেকনাফ সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়া এই বছর সুপারির ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষীদের বীজ, কীটনাশক এবং পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা দেয়া হয়।
এছাড়া সুপারির চাষ থেকে শুরু করে বিপনন পর্যন্ত কৃষি অফিস তদারকি করে বলেও জানান তিনি।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি