সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন গ্যাসের উৎস অনুসন্ধানে সরকার যথেষ্ট কাজ করেনি এমন সমালোচনার মধ্যেও পেট্রোবাংলা সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের অধীনে বিয়ানীবাজার এবং এর পার্শ্ববর্তী বড়লেখা ও কানাইঘাট উপজেলায় অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার বলেন, নতুন গ্যাসের উৎস অনুসন্ধানের আশায় নতুন কূপ খননের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এলাকায় অনুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে ভূকম্পন (সিসমিক) জরিপ চলছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আরও প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে আমরা বুঝতে পারব নতুন এলাকায় গ্যাসের মজুদ আছে কি না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা গ্যাস উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের দিকে যাব।’
তিনি বলেন, তিনটি উপজেলার ১৯১ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনুসন্ধান কাজ পরিচালনার জন্য চায়না পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ইজিপি ইন্টারন্যাশনালকে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে প্রকল্পের ২৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ঢাকায় পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলেন, নতুন কূপ খননের উদ্যোগটি ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল সময়কালে মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও কূপ খনন করার কাজ সরকারের পরিকল্পনার অংশ, যা গ্যাস সংকটের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎস থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে পারে।
পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যান দেখায় যে দেশে বর্তমানে প্রতিদিন ৪০০ কোটি ঘনফুটের বেশি চাহিদার বিপরীতে প্রায় ২৬৪ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয়।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন বলছে, সারাদেশে তাদের কারখানায় গ্যাস সরবরাহ না হওয়ায় তাদের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আরেকটি উন্নয়নে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের একটি পরিত্যক্ত কূপের (কূপ-১) পুনরায় খনন কাজ শুরু করেছে।
এ কূপ থেকে প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই কেন্দ্রে দুইটি কূপ রয়েছে। ১৯৯৯ সালে কূপ-১ এর গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে তা বন্ধ করা হয়। ২০১৬ সালের শুরুতে আবার সেই কূপ থেকে উৎপাদন শুরু হয় এবং সেই বছরের শেষের দিকে আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
মিজানুর রহমান জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও তিনটি কূপ খনন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন যে ২০১৫ সাল থেকে স্থানীয় গ্যাস ক্ষেত্রগুলোতে উৎপাদন ও সরবরাহ হ্রাস পাচ্ছে এবং নতুন অনুসন্ধানের কাজ না করা হলে ভবিষ্যতে এই হ্রাস অব্যাহত থাকবে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি