September 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 14th, 2023, 7:56 pm

দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার স্থাপনের উদ্যোগ

♦ পাওয়ার সেল বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ করেছে

♦ এটি বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে

♦ এটি বিদেশি পরীক্ষাগারের উপর নির্ভরতা কমাবে

সক্রিয় পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্বমানের পরীক্ষা, পরিদর্শন ও সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে প্রথম বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার স্থাপনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও তৃতীয় পক্ষের পরীক্ষা ও সার্টিফিকেশনের জন্য বাংলাদেশে কোনো স্বীকৃত বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার (লো, মিডিয়াম বা হাই ভোল্টেজ) নেই।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগের কারিগরি শাখা পাওয়ার সেলের পক্ষ থেকে নিযুক্ত একজন ইতালীয় পরামর্শক ইতোমধ্যে পরীক্ষাগারের সম্ভাব্যতা, প্রযুক্তিগত ও আর্থিক দিকগুলোর বিষয়ে খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘যদি কনসালট্যান্টের রিপোর্ট নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হিসেবে গ্রহণ করা হয়, আমরা আশা করি তবে বৈদ্যুতিক পরীক্ষার গবেষণাগার স্থাপনের বিষয়ে আমরা বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারব।’

তিনি বলেন, এই গবেষণাগার শুধু দেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কেনা সরঞ্জামের মান ও গুণমান নিশ্চিত করবে না, এটি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গবেষণাগার থেকে সীমিত সেবা পাচ্ছি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরদাতার কাছ থেকে পরীক্ষার লিখিত রিপোর্ট পেতে আমাদের হাজার হাজার ডলার খরচ করতে হয়, যার ফলে একটি প্রকল্পের সামগ্রিক ব্যয় বেড়ে যায়।’

এ সংক্রান্ত একটি সরকারি নথি থেকে জানা যায়, সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে সবার কাছে মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গত এক দশকে বিদ্যুৎ খাতে প্রশংসনীয় অর্জন হয়েছে।

২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।

ভিশন ২০৪১ অর্জনের জন্য, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের বিশাল সম্প্রসারণসহ বিপুল সংখ্যক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।

বিদ্যুৎ খাতের প্রবৃদ্ধির ফলে বেসরকারি খাতের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে ট্রান্সফরমার, ব্রেকার, সিটি/পিটি ও সুইচগিয়ার তৈরির জন্য উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে উৎসাহিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ খাতের প্রবৃদ্ধির জন্য ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন ইউটিলিটি প্রয়োজন। যাতে সংশ্লিষ্ট সুইচগিয়ার, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম ও লাইন আইটেমসহ শত শত এবং হাজার হাজার পাওয়ার ও ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার সংগ্রহ করা হয়।

স্বীকৃত বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগারের অনুপস্থিতিতে বৈদ্যুতিক ইউটিলিটি ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে বিদেশি বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগারের প্রশংসাপত্রের উপর নির্ভর করতে হয়, যার জন্য তাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়।

বিদেশি পরীক্ষাগারের উপর নির্ভরতা কমাতে তাই দেশে একটি স্বীকৃত উচ্চ ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার প্রয়োজন।

অফিসিয়াল সূত্র জানায়, পাওয়ার সেল এখন বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) অর্থায়নে তার ইতালীয় পরামর্শকের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।

পরামর্শদাতার কাজের মধ্যে রয়েছে- একটি বিশ্বমানের বৈদ্যুতিক পণ্য পরীক্ষার গবেষণাগার স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা। এ ছাড়া একটি স্বাধীন মিডিয়াম-ভোল্টেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রস্তাবিত লো-ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষার জন্য প্রস্তাবিত গবেষণাগার হিসেবে হাই-ভোল্টেজের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশংসাপত্র প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নকশা করা।

এটি পণ্য, কাজ ও পরিষেবার মূল্য অনুমান, যন্ত্রপাতি ও পরীক্ষা এবং পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নসহ একটি বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।

এটি ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রশাসনিক ও আইনি নথিও প্রস্তুত করবে এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অন্যান্য উপযোগীদের দ্বারা বিদ্যমান বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষার ল্যাবরেটরি সুবিধাগুলোও পর্যালোচনা করবে।

এ ছাড়া প্রযুক্তিগত, আর্থিক, ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ প্রভৃতি বিষয়গুলো বিদ্যমান ল্যাবরেটরি সুবিধাগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে।

—-ইউএনবি