অনলাইন ডেস্ক :
চীন এখন থেকে দেশের বাইরে নতুন আর কোনো কয়লাচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্পে থাকবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া তার এ প্রতিশ্রুতিকে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বৃহৎ নির্মাণ প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় চীন ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে অসংখ্য কয়লাভিত্তিক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ঠিক করা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চেষ্টা করে যাওয়া বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো চীনকে এ অর্থায়ন বন্ধে চাপও দিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি। “অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে যেন গ্রিন এনার্জি ও কম-কার্বন নিঃসরণ হয় এমন জ¦ালানি ব্যবহার হয়, সেজন্য সহায়তা দেওয়া বাড়াবে চীন এবং আমরা আর অন্য দেশে নতুন কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবো না,” জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে পাঠানো ভিডিও ভাষণে বলেন শি। ভাষণে চীনা প্রেসিডেন্ট এ প্রসঙ্গে আর বিস্তারিত না বললেও বেইজিংয়ের এমন পদক্ষেপে বিভিন্ন দেশে বিআইয়ের অধীনে থাকা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর সম্প্রসারণ সীমিত হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিআরআইয়ের অধীনে চীন অনেক দেশের রেল, সড়ক, বন্দর ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিনিয়োগ করেছে। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে চলতি বছরের প্রথমার্ধেই তারা নতুন কোনো কয়লা প্রকল্পে অর্থায়ন করেনি। চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ গ্রিনহাউস নিঃসরণকারী দেশ; তারা দেশের ভেতরকার জ¦ালানির চাহিদা মেটাতে কয়লার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীলও। গত বছর চীন ২০৩০ সালের আগেই তাদের কার্বন নিঃসরণের মাত্রা চূড়ায় উঠবে এবং এরপর ধীরে ধীরে তারা ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ দেশে পরিণত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। শি তার ভাষণে ওই প্রতিশ্রুতির কথাও উল্লেখ করেন। সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে চীনের প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আর কয়লাভিত্তিক প্রকল্প না করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক দূত জন কেরি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট শি যে গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।” আগামী মাসে স্কটল্যান্ডে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে হতে যাওয়া কপ২৬ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মাও শি’র প্রতিশ্রুতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এক টুইটে তিনি বলেছেন, “কয়লা বিদ্যুতের ভাগ্যলিপি যে দেয়ালে লেখা হয়ে গেছে, তা স্পষ্ট। প্রেসিডেন্ট শি দেশের বাইরে নতুন কয়লা প্রকল্প না করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি। আমার চীন সফরে যেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিও ছিল।”
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু