নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে বেড়েই চলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির অনিয়ম-দুর্নীতি। ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই আর্থিক সঙ্কটে পড়ছে। পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারীরা চাকরিচ্যুতসহ নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিরঅনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং শিক্ষাবোর্ড ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বেসরকরি কলেজের গভর্নিং বডি ও বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণের পরও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নীরব থাকে। এমন পরিস্থিতিতে হয়রানির শিকার অনেক ক্ষুব্ধ শিক্ষকই আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বোর্ড-অধিদপ্তর শিক্ষকের পক্ষে কোনো ভূমিকা না রেখে বরং প্রভাবশালী কমিটির পক্ষে ভূমিকা রাখে। বর্তমানে গভর্নিং ও ম্যানেজিং কমিটির নিয়ন্ত্রণে দেশে ৩০ হাজারেরও অধিক বেসরকারি স্কুল-কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরের ওসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অনিয়মের অভিযোগে কমিটি বাতিল করার এক্তিয়ার রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হচ্ছে না। আর সে কারণেই ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে।
সূত্র জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির প্রধান সরকারদলীয় সংগঠনের নেতা হলে কার্যত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। মাসের পর মাস ফাইল চালাচালিতেই সময়ক্ষেপণ করা হয়। তবে বোর্ড ও অধিদপ্তর রাজনৈতিকভাবে দুর্বল কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডের নির্দেশনা না মানলে কমিটির ভেঙে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এমনকি বোর্ডের নির্দেশনা না মানা অধ্যক্ষের এমপিও বাতিলের সুযোগও আছে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। বরং অভিযোগ রয়েছে, মাউশি ব্যবস্থা নিতে নিজ অধিদপ্তরেই এক কর্মকর্তার থেকে অন্য কর্মকর্তা শুধু ফাইল চালাচালি করেই সময়ক্ষেপন করা হয। তাছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া যায় না। ব্যবস্থা নিতে গেলে কমিটির পক্ষে সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদের তদবির আসে। এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো কোনো কর্মকর্তাও কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে বাধা দেন। ফলে বোর্ডের কর্মকর্তাদের পক্ষে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, অনেক প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বা শিক্ষা কমিটি থাকে। ওই কমিটির সভাপতি প্রতিষ্ঠান প্রধান (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ওই উপ-কমিটিতে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির এমন সদস্য সভাপতি হয় যার শিক্ষা নিয়ে কোনো ধারণাও নেই। আর সভাপতিই শিক্ষকদের ওপর খবরদারি করে। তারা শিক্ষার মান উন্নয়নে ভুল পদক্ষেপ নেয়। ওসব কারণে শিক্ষার মান নিম্নগামী হচ্ছে। পরীক্ষার ফলও খারাপ করছে। এ বিষয়ে বোর্ডের বা মাউশির নজরদারি নেই। মূলত গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান কাঠামো পরিবর্তন না করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সবসময় অসহায়ই থাকবে বোর্ড অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ