রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে সোমবার সকালে সাড়ে ৩৬ কেজি ওজনের একটি বিপন্ন বাগাড় মাছ প্রায় অর্ধলাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এর আগে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের অদূরে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ে।
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ প্রায় ৪৬ হাজার টাকায় কিনে ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
জেলে ও ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার ভোরে পাবনার জেলেরা নদীতে জাল ফেলে ফেরিঘাট থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার ভাটিতে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় চর করনেশনা পৌঁছে। সকাল ৬টার দিকে জালে ঝাকি দিলে বুঝতে পারেন বড় কিছু আটকা পড়েছে। জাল গুটিয়ে নৌকায় তোলার আগে দেখেন বিশাল এক বাগাড়। বাগাড়টি তুলতে জেলেদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। বিক্রির জন্য দৌলতদিয়াঘাট দুলাল মন্ডলের আড়তে ওজন দিয়ে দেখেন ৩৬ কেজি ৬০০ গ্রাম। এতবড় বাগাড় এ মৌসুমে প্রথম বার ধরা পড়েছে। নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ বাগাড়টি কিনেন।
দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ বলেন, ভোরে নদীতে প্রায় এক মণ ওজনের বাগাড় ধরা পড়ার খবর পেয়ে বাজারে আসি। সকাল ৭টার দিকে দুলাল মণ্ডলের আড়তে বাগাড়টি তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে ৪৬ হাজার টাকায় কিনে নেই। মাছটি ৬ নম্বর ফেরি ঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখলে ঢাকামুখী বহু মানুষ বাগাড়টি দেখতে ভিড় করেন। দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার এক বড় ব্যবসায়ীর কাছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা করে লাভে ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।
তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে বিক্রি করেছি। পরে নিজেই মাছটি নিয়ে রওয়ানা হয়েছি।
বাগাড় বিপন্ন প্রজাতির জানা সত্বেও কিনছেন কেন জানতে চাইলে বলেন,বাগাড় যারা ধরেন, বিক্রি করেন অপরাধ করলে তারা করেছে। আড়তে নিলামে তোলা হলে আমরা কিনে নেই।
এ ছাড়া কোনো দিন এ ব্যাপারে অভিযান চালাতে দেখিনি বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ২২ জুন শাহজাহান শেখ স্থানীয় রওশন মোল্লার আড়ত থেকে ২৯ কেজি ওজনের একটি বাগাড় ৩৫ হাজার টাকায় কিনে বিক্রি করেন।
তার আগে ১৭ জুন দৌলতদিয়া কলার বাগান এলাকায় জেলেদের জালে প্রায় ২৬ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের একটি, ৯ জুন চর করনেশনা এলাকায় পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় সাড়ে ২৭ কেজি ওজনের একটি, ১৩ জানুয়ারী পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় সাড়ে ২৭ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় এবং ২৫ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর গুদারবাজার এলাকায় জেলেদের জালে ২৭ কেজি ওজনের বাগাড় ধরা পড়ে।
গোয়ালন্দ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল-রাজিব বলেন, বাগাড় মাছ সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী আইনে চলে গেছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে না থাকায় আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না।
তবে আমার জানা মতে বাগাড় শিকার, ক্রয়-বিক্রয় বা খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই বলেও জানান তিনি।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি